প্রতীকী ছবি।
ভোটে অংশ নেওয়ার নিরিখে রাজ্যের গড়ের তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে থাকে কলকাতা। ভোটার তথ্য যাচাই কর্মসূচিতেও (ইভিপি) তার ব্যতিক্রম হয়নি।
এ ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য জেলার থেকে কয়েক যোজন পিছনে পড়ে রয়েছে কলকাতা। বুধবার সকাল পর্যন্ত ইভিপি-তে রাজ্যের গড় ছিল প্রায় ৫৬ শতাংশ। অথচ, কলকাতায় তা ২০ শতাংশেরও নীচে। কলকাতা দক্ষিণে মাত্র ১৮ শতাংশ ভোটার তাঁদের নাম, ঠিকানা, বয়স-সহ অন্য তথ্য যাচাই করেছেন। কলকাতা উত্তরের হাল আরও খারাপ। কারণ সেখানে মাত্র ১৩ শতাংশ ভোটার ইভিপি-তে অংশ নিয়েছেন।
অনলাইনে ভোটার তথ্য যাচাই কর্মসূচি হয়েছে। নেটওয়ার্ক বা ইন্টারনেট সংযোগের সমস্যা অন্য সব জেলার তুলনায় কলকাতায় অনেকাংশেই কম। তার পরেও কেন এই অবস্থা? নির্বাচন কমিশনের কর্তাদের একাংশের ব্যাখ্যা, কলকাতার মানুষের মধ্যে ভোট সংক্রান্ত বিষয়ে অনীহা বরাবরই রয়েছে। তথ্য যাচাইয়ে সেই অনীহা আরও বেড়েছে। ইভিপি-র উদ্দেশ্যই ছিল যে, ভোটার নিজে তার তথ্য যাচাই করে নিন। তাতে কেউ যদি নিজে অংশ নিতে না চান, তবে তো আর জোর করে কিছু করা যায় না।
এই অনীহা নিয়ে অনেক ভোটারের যুক্তি, তথ্য যাচাই না করলে তো কোনও সমস্যা নেই। তা হলে এ সব নিয়ে কেন সময় নষ্ট করা হবে? আবার ভোটারদের অনেকের অনুযোগ, তথ্য যাচাইয়ের জন্য কমিশনের তরফে ভোটার সহায়তা কেন্দ্রের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে গিয়ে অনেক সময়ে তালা বন্ধ থাকতে দেখা গিয়েছে।
গত লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে ভোট দিয়েছিলেন ৮২ শতাংশ মানুষ। সেখানে কলকাতা উত্তরে ভোট দেন ৬৬ শতাংশের মতো। কলকাতা দক্ষিণের চিত্র অবশ্য কিয়দংশে ভাল ছিল। সেখানের ৭০ শতাংশের মতো ভোটার ভোট দিয়েছিলেন।
ভোট প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকা কর্মীদের মতে, কলকাতা উত্তরে ব্যবসায়িক এলাকা বেশি রয়েছে। যা ভোট বাড়ানোর পক্ষে একটু কষ্টসাধ্য। ভোট নিয়ে অনেকের মাথাব্যথা যথেষ্টই কম। যেখানে ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রেই এত অনাগ্রহ, সেখানে তথ্য যাচাইয়ে মানুষ যে আগ্রহী হবে না, সেটাই স্বাভাবিক।
এ হেন পরিস্থিতির মধ্যে কমিশনের কর্তাদের মতে, ভোটারের আগ্রহ না থাকলেও তাঁরা চেষ্টা চালিয়ে যাবেন। যাতে যত বেশি সম্ভব ভোটারকে এই ইভিপি-র আওতায় আনা যায়। প্রয়োজনে সহায়তা কেন্দ্র বাড়ানোও হতে পারে।