কলকাতায় নাগরিক মিছিল। —নিজস্ব চিত্র।
কামদুনিকাণ্ডে হাইকোর্টের রায়ের প্রতিবাদে মঙ্গলবার নাগরিক মিছিল হল কলকাতায়। সেই মিছিলে হাঁটলেন সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষ। ছিলেন কামদুনির বহু সাধারণ মানুষও। একাধিক মহিলা সংগঠনের কর্মীরা যোগ দিয়েছিলেন মঙ্গলবারের মিছিলে। ১০ বছর আগে কামদুনির ধর্ষিতা, মৃতা তরুণীর বান্ধবী মৌসুমী কয়াল ও টুম্পা কয়ালরাও মিছিলে যোগ দিয়ে জানান, তাঁরা পৃথক ভাবে সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে সাজা মকুবের বিরুদ্ধে আবেদন করবেন।
কামদুনির ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় গত শুক্রবার রায় ঘোষণা করে কলকাতা হাই কোর্ট। এই মামলায় যে তিন জনের ফাঁসির নির্দেশ দিয়েছিল নিম্ন আদালত, তাদের মধ্যে এক জনকে বেকসুর খালাস করে উচ্চ আদালত। বাকি দু’জনের সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পাশাপাশি আরও চার দোষী সাব্যস্তের সাজা মকুবও করে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ।
সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সোমবার সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল রাজ্য। বিচারপতি বিআর গভাইয়ের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির বেঞ্চে রাজ্য মামলা দায়ের করেছে। সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ রাজ্যের বক্তব্য শোনার পর সোমবার বলে, আগে এই মামলার সব পক্ষের বক্তব্য শুনতে চায় তারা। তার পর স্থগিতাদেশ নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। একই সঙ্গে যে ফাঁসির সাজাপ্রাপ্তকে বেকসুর খালাস করেছিল হাই কোর্ট, তাঁর কাছেও জানতে চাওয়া হয়েছে, কেন তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হবে না? উত্তর দেওয়ার জন্য সাত দিন সময় বেঁধে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বেঞ্চ জানিয়েছে, এক সপ্তাহ পর আবার মামলাটি শুনবে সুপ্রিম কোর্ট।
ফাঁসির আসামীকে বেকসুর খালাস করে দেওয়া বিরলতম নির্দেশ বলেই মত আইনজ্ঞদের অনেকের। ওই রায়ের পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছিল কামদুনি। নাগরিক মিছিলে আসা অনেকেই মঙ্গলবার বলেন, রাজ্য সরকারের পুলিশই লঘু করে চার্জ তৈরি করেছিল। যে কারণে অপরাধীরা মুক্তি পেয়েছে। মৌসুমী বলেন, ‘‘আমাদের রাজ্যের উপর ভরসা নেই। আমরা মঞ্চ গড়ে সুপ্রিম কোর্টে যাব।’’