CID

দত্তক দেওয়ার নামে প্রতারণা, অভিযোগ নেয়নি সিআইডি

তদন্তে নেমে সিআইডি চন্দনা চক্রবর্তী, তাঁর ভাই মানস-সহ একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। ধরা পড়েন দুই সরকারি আধিকারিকও।

Advertisement

দীক্ষা ভুঁইয়া

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:১৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

দত্তক নিতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হওয়া কাশীপুরের এক দম্পতিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও অভিযোগ নেয়নি সিআইডি!

Advertisement

এমনই অভিযোগ করেছেন ওই দম্পতি। তাঁদের দাবি, একটি শিশুপুত্র দত্তক নিতে কেন্দ্রীয় সরকারি বিধি মেনে ২০১৫ সালে অনলাইনে আবেদন করেছিলেন তাঁরা। সেই পদ্ধতি মেনে দত্তক নিতে গেলে কিছু দিন অপেক্ষা করতে হয়।

ওই দম্পতির সঙ্গে এর পরে জলপাইগুড়ির একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার যোগাযোগ হয়। ওই সংস্থা তাঁদের জানায়, মোটা টাকা দিলে দ্রুত একটি শিশুকে তাঁরা পেতে পারেন। সেই মতো ওই দম্পতির হাতে একটি প্রতিবন্ধী শিশুকে তুলে দেন হোমের মালকিন চন্দনা চক্রবর্তী। পরিবর্তে চন্দনা ও তাঁর এক সহকারী সঞ্জীব মুখোপাধ্যায় দু’লক্ষ টাকা নেন। কাশীপুরের দম্পতি জানিয়েছেন, শারীরিক প্রতিবন্ধী ও অসুস্থ শিশুটিকে সামলাতে না পেরে তাঁরা বন্ডে সই করে শিশুটিকে ফেরত দিয়ে আসেন। এর পরে একটি সুস্থ শিশুকে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও চন্দনা বা সঞ্জীব, কেউ যোগাযোগ করেননি।

Advertisement

এর মধ্যেই জলপাইগুড়ির হোম-কাণ্ড সামনে আসে। তদন্তে নেমে সিআইডি চন্দনা চক্রবর্তী, তাঁর ভাই মানস-সহ একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। ধরা পড়েন দুই সরকারি আধিকারিকও। আর সেই তদন্ত চালাতে গিয়েই কাশীপুরের দম্পতির খোঁজ পান সিআইডি-কর্তারা। এমনকি, সিআইডি-র তদন্তকারী অফিসারদের এক জন নিজে এসে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন বলেও দাবি ওই দম্পতির। কিন্তু সব শুনেও ওই তদন্তকারী অফিসার কাশীপুরের দম্পতির অভিযোগ মূল মামলার সঙ্গে যুক্ত করেননি। আর তাই ধরা পড়েননি সঞ্জীব মুখোপাধ্যায় নামে চন্দনার সহকারী। যদিও ওই দম্পতির কথায়, ‘‘সঞ্জীব নিজেকে মুখোপাধ্যায় বলে দাবি করলেও আর একটি জায়গায় দেখা যায়, তাঁর নাম সঞ্জীব মৈত্র!’’

অন্য দিকে, সিআইডি-র একটি সূত্র জানাচ্ছে, জলপাইগুড়িতে সঞ্জীব নামে চন্দনার আরও এক সহকারীর খোঁজ মিলেছে। তবে তিনি সঞ্জীব সরকার। সিআইডি জানতে পেরেছে, শিশু দত্তক দেওয়ার নামে টাকা লেনদেনে চন্দনার সঙ্গে সঞ্জীব সরকারেরও হাত রয়েছে। সেই সঞ্জীবকে গ্রেফতার না করে মামলার সাক্ষী করা হয়েছে বলে জলপাইগুড়ি আদালত সূত্রের খবর। আদালত জানিয়েছে, মঙ্গলবার সঞ্জীবের সাক্ষ্যগ্রহণ ছিল।

প্রশ্ন উঠেছে, এই সঞ্জীব সরকারই কি কাশীপুরের দম্পতির কাছ থেকে টাকা নিয়ে প্রতারণা করায় অভিযুক্ত সঞ্জীব মুখোপাধ্যায় বা মৈত্র? এ প্রশ্নের উত্তর একমাত্র সিআইডি-র তদন্তকারী অফিসারেরাই দিতে পারেন। যদিও তাঁরা মুখ খুলতে নারাজ। তবে শুধু সঞ্জীব সরকার কিংবা সঞ্জীব মুখোপাধ্যায়ই নন, হোম-কাণ্ডে প্রত্যক্ষ অভিযুক্ত চন্দনার ছেলে রাজর্ষি চক্রবর্তীর আগাম জামিন হাইকোর্টে খারিজ হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে গ্রেফতার করেনি সিআইডি। গ্রেফতার করা হয়নি চন্দনার ভ্রাতৃবধূ রীতা বারুইকেও। কিন্তু কেন? সিআইডি-র জলপাইগুড়ি বেঞ্চের এক আধিকারিককে প্রশ্ন করা হলেও তিনি উত্তর দিতে চাননি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement