কে
আদি চিত্তেশ্বরী দুর্গা
কেন
রামপ্রসাদ সেন তখন দুর্গাচরণ মিত্রের জমিদারি সেরেস্তায় কাজ করতেন। মাসে একবার কলকাতা থেকে নৌকায় হালিশহরের বাড়িতে যান। গঙ্গাবক্ষে যেতে যেতে সাধক রামপ্রসাদ গাইতেন একের পর এক স্বরচিত শ্যামাসঙ্গীত। উদাত্ত গলার সেই গান শুনতে পেতেন গঙ্গাতীরের লোকজন। রামপ্রসাদের গানের রেশ পৌঁছত চিত্তেশ্বরীর মন্দিরেও। কিন্তু দেবী ঠিকমতো শুনতে পেতেন না সেই গান। সরাসরি রামপ্রসাদকেই চিত্তেশ্বরী বলেন, ‘‘কী গান করিস! ভালমতো শুনতেই পাই না!’’ রামপ্রসাদ দমবেন কেন? তিনি দেবীকে পাল্টা বলেন, ‘‘অতই যদি গান শোনার সাধ, তা হলে গঙ্গার দিকে মুখ ফিরিয়ে দাঁড়া!’’ দেবী আর কথা বাড়াননি। গঙ্গার দিকে মুখ ঘুরিয়ে দাঁড়ান। তার পর থেকেই চিত্তেশ্বরীর মুখ গঙ্গার দিকে খানিক বাঁকানো।
কোথায়
খগেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রোড, কাশীপুর, কলকাতা-৭০০০০২
কখন
ডাকাত আর হিংস্র জন্তুতে ভরা জঙ্গলে নিমকাঠের দুর্গাপ্রতিমা গড়ে পুজো করেন ‘চিতে ডাকাত’ চিত্তেশ্বর রায়। সেই থেকেই দেবীর পরিচিতি ‘চিত্তেশ্বরী’ নামে। আর এলাকার নাম ‘চিৎপুর’। চিতে ডাকাতের কাল ফুরোলে দেবী দীর্ঘকাল অবহেলায় পড়েছিলেন। সন্ন্যাসী নৃসিংহ ব্রহ্মচারী স্বপ্নাদেশ পেয়ে ১৫৮৬ সালে মূর্তিটি উদ্ধার করে একটি কুঁড়েঘরে পুজো শুরু করেন। এলাকার জমিদার মনমোহন ঘোষ পরে মন্দির নির্মাণ করেন। নামজাদা ধনী গোবিন্দরাম মিত্র মন্দির আরও বড় করেন। নৃসিংহ ব্রহ্মচারী অবিবাহিত হওয়ায় গুরু-শিষ্য পরম্পরায় মন্দিরের সেবার ভার ছিল দীর্ঘকাল। অষ্টম প্রজন্মের সেবাইত শ্যামসুন্দর ব্রহ্মচারী বিবাহ করেন। তাঁর দুই কন্যা— যদুমণি ও ক্ষেত্রমণি। ক্ষেত্রমণির বিবাহ হয় হালিশহরের সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবারে। সেই বংশই এখনও পর্যন্ত মন্দিরের সেবা করে আসছে।
এখন
মন্দিরের প্রধান সেবাইত কাশীশ্বর রায়চৌধুরী জানাচ্ছেন, একদা এই পুজোয় নরবলি হয়েছে। পরে ছাগবলি হত। এখন ফলবলি হয়। এ বছর অতিমারি আবহেও কালীপূজায় ভক্তদের জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা থাকছে। স্যানিটাইজার বা মাস্ক ছাড়া মন্দিরে প্রবেশ করা যাবে না।
বৃহস্পতিবার: ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি