উদ্বোধনের অপেক্ষায় দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের এই মূর্তিটি। বৃহস্পতিবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য।
তাঁর নামে কলেজ। আবক্ষ মূর্তিটিও তাঁরই। অথচ কলেজের বাইরের দেওয়ালের গায়ে বসানো সেই মূর্তিই বছর দুয়েক ধরে উদ্বোধনের অপেক্ষায়। উত্তর কলকাতার কলেজ স্ট্রিটে চিত্তরঞ্জন কলেজের সামনে দিয়ে গেলে পথচারীরা অবাক চোখে দেখেন, ধূলিধূসরিত, প্লাস্টিক জড়ানো দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের আবক্ষ মূর্তিটি।
মূর্তির উদ্বোধন কেন হল না? তার রক্ষণাবেক্ষণই বা হয় না কেন? এর উত্তর খুঁজতে গিয়ে যাঁর আমলে ২০২২ সালে এই আবক্ষ মূর্তি বসানোর প্রচেষ্টা শুরু হয়েছিল, সেই প্রাক্তন অধ্যক্ষ শ্যামলেন্দু চট্টোপাধ্যায় জানালেন, এই মূর্তি আগে কলেজ ক্যাম্পাসের ভিতরে ছিল। ২০২২ সালে ছাত্র সংসদ মূর্তিটি কলেজের বাইরের দেওয়ালে রাখতে উদ্যোগী হয়।
শ্যামলেন্দু বলেন, ‘‘কলেজের ছাত্রনেতা-নেত্রীরা সুন্দর করে মূর্তিটি রাখতে উদ্যোগী হয়েছিলেন। আলো লাগিয়ে, কাচের দরজা দিয়ে সুন্দর করে রাখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তা হয়নি।’’
তা না হলেও এমন মলিন দশা কেন দেশবন্ধুর মূর্তির? সূত্রের খবর, ওই মূর্তি বসানোর জন্য ছাত্রনেতারা এমন খরচের খতিয়ান দিয়েছিলেন যে, তা আর কলেজের পরিচালন সমিতিতে পাশ হয়নি। তাই মূর্তি বসানোর পাশাপাশি তার সৌন্দর্যায়নের কাজও মাঝপথেই বন্ধ হয়ে যায়।
স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তথা এই কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি বিবেক গুপ্ত বলেন, ‘‘মূর্তি বসানোর জন্য যদি যুক্তিযুক্ত কিছু চাওয়া হত, তবে অবশ্যই দেওয়া হত। কিন্তু তা চাওয়া হয়নি।’’ মূর্তি বসানো এবং সৌন্দর্যায়নের অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন কলেজের প্রাক্তন ছাত্র এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা লালনকুমার দাস ওরফে প্রেম। মূর্তির নীচে পরিচালন সমিতির সভাপতি ও তৎকালীন অধ্যক্ষের নামের সঙ্গে নিজের ও এক ছাত্রনেত্রীর নামও সে সময়ে লেখার ব্যবস্থা করেছিলেন প্রেম। মূর্তির নীচে খোদাই করা সেই অংশে কাগজ সাঁটা রয়েছে।
এ দিন প্রেম বলেন, ‘‘বিবেক গুপ্ত ঠিক কথা বলছেন না। আমার কাছে সব হিসেব রয়েছে। আমি চাই এই মূর্তির উদ্বোধন হোক।’’ তবে কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষা কণামণি মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, মূর্তিটি যে আদৌ আছে, তা তিনি খেয়াল করেননি। শুক্রবার কলেজে গিয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন।