Chinese Manja

চিনা মাঞ্জায় কি ফের বাড়বে বিপদ? চিন্তা বাড়াচ্ছে শহরতলির বাজার

ঘুরপথে আনা চিনা মাঞ্জায় ফের পুরনো বিপদ লাগামছাড়া হবে কি— বিশ্বকর্মা পুজোর আগে এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে সাধারণ নাগরিক থেকে শুরু করে পুলিশকর্তাদের একাংশের মনে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৫:৫৮
Share:

চিনা মাঞ্জা। ফাইল ছবি

নিষিদ্ধ চিনা মাঞ্জা বিক্রি বন্ধে শহরের একাধিক ঘুড়ির বাজারে নজরদারির কথা আগেই বলেছিল প্রশাসন। তা সত্ত্বেও চিন্তা বাড়াচ্ছে শহরতলির বাজারগুলি। সেখান থেকে ঘুরপথে আনা চিনা মাঞ্জায় ফের পুরনো বিপদ লাগামছাড়া হবে কি— বিশ্বকর্মা পুজোর আগে এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে সাধারণ নাগরিক থেকে শুরু করে পুলিশকর্তাদের একাংশের মনে।

Advertisement

রাত পোহালেই বিশ্বকর্মা পুজো। এই উপলক্ষে ইতিমধ্যেই শহরের বিভিন্ন প্রান্তে জমে উঠেছে ঘুড়ির বাজার। যা চিন্তা বাড়াচ্ছে লালবাজারের। আগেই শহরের একাধিক রাস্তায়, বিশেষত উড়ালপুলগুলিতে বিপজ্জনক চিনা মাঞ্জায় আহত হওয়ার একাধিক ঘটনা ঘটেছে। উড়ালপুলে তারের জাল লাগিয়েও চিনা মাঞ্জার দৌরাত্ম্য পুরোপুরি কমানো যায়নি। দিনকয়েক আগে মা উড়ালপুলে ঘুড়ির কাটা সুতো আটকে আহত হন এক বাইকচালক। হাতে আঘাত লাগলেও বাইকের গতি কম থাকায় সে যাত্রায় রক্ষা পান তিনি। কিন্তু সামনেই ঘুড়ি ওড়ানোর মরসুম। তাই নজরদারির ফাঁক গলে ফের চিনা মাঞ্জায় দুর্ঘটনার আশঙ্কায় ভুগছে বিভিন্ন মহল।

লালবাজার সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই দুর্ঘটনা এড়াতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নির্দেশ গিয়েছে প্রতিটি ডিভিশনেও। ঘুড়ি ওড়ানোর প্রবণতা বেশি, এমন এলাকাগুলিকে চিহ্নিত করে প্রয়োজনে ড্রোন উড়িয়ে নজরদারি চালানোর কথা ভাবা হয়েছে। শহরের একাধিক উড়ালপুলের বিপজ্জনক অংশে ঘুড়ির কাটা সুতো ধরতে পুলিশকর্মী মোতায়েনের নির্দেশও দিয়েছে লালবাজার। থানাগুলিকেও এ নিয়ে সচেতনতা প্রচারের কথা বলা হয়েছে। শহরের যে যে এলাকায় মাঞ্জা সুতোয় একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেখানে বাড়তি নজরদারি চালানোর কথা বলেছে লালবাজার।

Advertisement

নজরে রয়েছে শহরের একাধিক ঘুড়ি বাজারও। সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার, ক্রিক রো, বাঘা যতীন-সহ একাধিক জায়গায় ইতিমধ্যেই জমে উঠেছে ঘুড়ি বাজার। চিনা মাঞ্জা বিক্রি বন্ধে সেখানে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করেছে প্রশাসন। পাশাপাশি, বিধি-ভঙ্গে শাস্তি কী হতে পারে, সেই প্রচারও করা হয়েছে। কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, চিনা মাঞ্জা বিক্রি করলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৮৮ ধারায় ব্যবস্থা নিতে পারে পুলিশ। নির্দিষ্ট জিনিস বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি তাঁকেও গ্রেফতার করা হতে পারে। তবে শহরের ঘুড়ি ব্যবসায়ীদের দাবি, পুলিশি ধরপাকড়ের ভয়ে কলকাতার ঘুড়ি বাজারে চিনা মাঞ্জা বিক্রি হয় না বললেই চলে। যদিও পুলিশি নজরদারির ফাঁক গলে শহরতলির একাধিক বাজারে এখনও বিকোচ্ছে চিনা মাঞ্জা। সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার সংলগ্ন ঘুড়ি বাজারের এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘কলকাতায় পুলিশের ভয়ে কেউ সাধারণত চিনা মাঞ্জা রাখেন না। তবে আশেপাশের এলাকায় তা পাওয়া খুব কঠিন নয়।’’

ফলে ওই সব বাজার থেকে চিনা মাঞ্জা এনে শহরের আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর প্রবণতা অনেকেরই রয়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের, যা চিন্তায় রাখছে পুলিশকেও। শহরতলির বাজারে চিনা মাঞ্জার বিক্রি নিয়ন্ত্রণ কী ভাবে সম্ভব— সেই প্রশ্ন ঘুরছে পুলিশের অন্দরেই। পার্ক সার্কাস এলাকায় কর্তব্যরত এক পুলিশকর্মী বলেন, ‘‘আকাশে হাজার হাজার ঘুড়ি ওড়ে এ সময়ে। তার মধ্যে কোনটা কেটে এগিয়ে আসছে, কোনটার সুতো ঝুলছে— সব সময়ে নজর রাখা কি সম্ভব?’’

লালবাজারের এক পুলিশকর্তা অবশ্য বললেন, ‘‘ইতিমধ্যেই আমরা প্রতিটি ডিভিশনকে সতর্ক করেছি। ঘুড়ির বাজারগুলিতেও নজর রাখতে বলা হয়েছে। পুলিশের তরফে যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার, সব নেওয়া হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement