ফাইল চিত্র।
গত বছর থেকেই ছোটদের পঠনপাঠন চলছে অনলাইনে। সেই ব্যবস্থার সঙ্গে তাল মিলিয়ে ক্লাস করাতে হচ্ছে গৃহশিক্ষকদেরও। কিন্তু হাতে ধরে শেখাতে না পারায় সমস্যায় পড়েছেন আঁকার শিক্ষকেরা। বাধ্য হয়ে ক্লাস বন্ধ করে দিচ্ছেন অনেকে।
অফলাইন ক্লাসের বিকল্প নয় ঠিকই, তবু ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে ছোটদের পড়া বোঝানোয় অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছেন গৃহশিক্ষকেরা। গান, নাচের মতো সৃজনশীল প্রশিক্ষণও দিতে চেষ্টা করছেন শিক্ষকেরা। কিন্তু তাঁদের অধিকাংশেরই মত, হাতে ধরে না শেখালে ছোটদের আঁকা শেখানোই যায় না। সেটা কোনও ভাবেই সম্ভব নয় অনলাইনে। ভিডিয়ো কলে শিক্ষকের আঁকা দেখে চেষ্টা করলেও, এ ভাবে শেখার ভিত মজবুত হয় না বলেই মনে করছেন তাঁরা। ফলে বাধ্য হয়েই ক্লাস বন্ধও করে দিচ্ছেন বহু শিক্ষক-শিক্ষিকা। আবার কেউ কেউ নিজের আঁকার ভিডিয়ো বানিয়ে এবং ভিডিয়ো কলে ছাত্রছাত্রীদের আঁকা দেখে চেষ্টা করছেন।
ছোটদের আঁকা শেখান ব্যারাকপুরের সম্পূর্ণা দাস। তিনি জানাচ্ছেন, “হাতে ধরে না দেখালে, নিজের চোখে রং করা না দেখলে আঁকা শেখানো খুব মুশকিল।” তবে নিজের এবং পড়ুয়াদের প্রয়োজনে ক্লাস চালু রেখেছেন তিনি। নিজে ছবি এঁকে এবং রং করে ভিডিয়ো করে পাঠাচ্ছেন। তাই দেখে ছাত্রছাত্রীরা কেমন আঁকছে সেটাও ভিডিয়ো কলে দেখতে হচ্ছে। সম্পূর্ণা বলেন, “ভুল হলে শুধরে দেওয়াও কঠিন। তা-ও এ ভাবেই যতটা পারি করছি।” আর এক আঁকার শিক্ষিকা রিয়া রায়চৌধুরী ক্লাস বন্ধই রেখেছেন লকডাউনে। তিনি বলেন, “সব জিনিস অনলাইনে হয় না। আঁকা শেখানো তার মধ্যে অন্যতম। তাই আমাদের কোনও উপায় নেই।” আঁকা শেখানো যাঁদের উপার্জনের অন্যতম উপায়, এই পরিস্থিতিতে তাঁদের সমস্যা গুরুতর।
সমস্যার কথা মেনে নিচ্ছেন অভিভাবকেরাও। তাঁদের মতে, অনলাইন ক্লাস বা ইউটিউব, ভিডিয়ো দেখে ছোটরা আঁকা শিখলে তা কখনওই শিক্ষকের হাতে ধরে শেখানোর পরিপূরক হয় না। ষষ্ঠ শ্রেণির এক পড়ুয়ার মা পাপিয়া দাস যেমন বললেন, “মেয়ের আঁকা শেখার খুব ইচ্ছে। কিন্তু অনলাইন ক্লাসের ভরসা করতে পারছি না। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে শিক্ষকের কাছে পাঠাব।” অতএব অতিমারিকে অতিক্রম করে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার অপেক্ষায় দিন গুনছেন আঁকার শিক্ষক-শিক্ষিকারাও।