প্রতীকী ছবি।
বাইরে লোকজনের চেঁচামেচি শুনে তড়িঘড়ি বেরিয়ে এসেছিলেন কারখানার দারোয়ান। ভিড়ের মধ্যে গিয়ে দেখেন, রাস্তার উপরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে তাঁরই মেয়ে। জানতে পারেন, গাড়ির ধাক্কা
লেগেছে মেয়ের। সাত বছরের সেই মেয়েকে নিয়ে তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে ছুটলেও চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার মালিপাঁচঘরা এলাকায়। পুলিশ জানায়, মৃত শিশুটির নাম দিব্যা মালি। সে স্থানীয় একটি স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ত। জে এন মুখার্জি রোডে পরিবারের সঙ্গে থাকত দিব্যা। ওই ঘিঞ্জি এলাকার ভিতরেই রয়েছে একের পর এক কারখানা। তারই একটিতে দীর্ঘ দিন ধরে দারোয়ানের কাজ করছেন বিনোদ মালি। ওই কারখানারই দোতলায় স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে তাঁর সংসার। দিব্যা তাঁরই ছোট মেয়ে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, প্রতিদিনের মতো ওই দিনও রাত পৌনে ৯টা নাগাদ টিউশন ক্লাস থেকে একা বাড়ি ফিরছিল দিব্যা। বাড়ির একেবারে কাছেই ঘটে দুর্ঘটনা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ঘিঞ্জি রাস্তায় একটি মালবাহী গাড়ি সেই সময়ে পিছোচ্ছিল। এরই মধ্যে সেখানে চলে আসে দিব্যা। চালক তাকে খেয়াল করেননি। দিব্যাও গাড়িটির একেবারে পিছনেই ছিল। গাড়িটির পিছনের অংশ সজোরে ধাক্কা মারে ওই শিশুটির মাথায়। ধাক্কা লাগতেই সে রাস্তায় পড়ে যায়। আওয়াজ শুনে বেরিয়ে আসেন আশপাশের লোকজন।
সেই সময়ে কারখানাতেই ডিউটিতে ছিলেন বিনোদ। বাইরে চেঁচামেচি শুনে তিনিও বেরিয়ে আসেন। তাঁর কথায়, ‘‘বাইরে গোলমাল হচ্ছে ভেবে বেরিয়ে এসেছিলাম। ভিড়ের মধ্যে গিয়ে যে নিজের মেয়েকেই ওই অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখব, কে জানত!’’
এর পরেই এলাকার লোকজন গুরুতর জখম দিব্যাকে নিয়ে যান হাওড়া জেলা হাসপাতালে। এই ঘটনার পরে অবশ্য গাড়ি ফেলে পালিয়ে যাননি চালক সফিক। ওই যুবকই এলাকার এক জনের বাইকে বিনোদকে নিয়ে পৌঁছে যান হাসপাতালে। তবে সেখানে চিকিৎসকেরা দিব্যাকে পরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষণা করেন। প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসকদের অনুমান, মস্তিষ্কে আঘাত লেগেই মৃত্যু হয়েছে শিশুটির। মালিপাঁচঘরা থানার পুলিশ গাড়িটি আটক করার পাশাপাশি সফিককে গ্রেফতার করেছে।