বন্ধ ছিল প্রায় দু’মাস। ফের চালু হল সপ্তাহের প্রথম কাজের দিন সোমবারে। এ দিনও কোনও এক আইনজীবীর মৃত্যুতে এক ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করলেন কলকাতা হাইকোর্টের অধিকাংশ আইনজীবী। যার জেরে নিজের এজলাসে ফের বিরক্তি প্রকাশ করলেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর।
তিন দিন আগেই ‘আপনি আচরি ধর্ম পরেরে শেখাও’, এই আপ্তবাক্য মেনে শনিবার, ছুটির দিনে তিনি বিশেষ কতগুলি মামলার শুনানি শুনতে রাজি আছেন বলে জানিয়ে দেন প্রধান বিচারপতি। তিনি কাজ করতে চান জেনে আইনজীবীদের একাংশও ছুটির দিনে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। হাইকোর্টের কর্মসংস্কৃতি ফেরাতে প্রধান বিচারপতি উদগ্রীব হলেও, অধিকাংশ আইনজীবী যে এখনও সেই পথে হাঁটতে চাইছেন না, এ দিনের কর্মবিরতি পালন তার প্রমাণ বলে মনে করছেন প্রবীণ আইনজীবীরা।
এ দিন সকালে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এজলাসে বসার পরে জানতে পারে, এক আইনজীবীর মৃত্যুতে বিকেল সাড়ে ৩টে থেকে সাড়ে ৪টে (হাইকোর্ট বন্ধ হওয়ার সময়) পর্যন্ত কর্মবিরতি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইনজীবীদের কয়েকটি সংগঠন। হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে কর্মবিরতির প্রস্তাবও পাঠিয়ে দেওয়া হয় প্রধান বিচারপতি-সহ অন্য বিচারপতিদের এজলাসে।
তা জেনে প্রধান বিচারপতি তাঁর আদালতে হাজির থাকা কয়েক জন প্রবীণ আইনজীবীর উদ্দেশে জানান, তাঁরা যেন এই বিষয়টি (কর্মবিরতি) দেখেন। প্রধান বিচারপতি ওই আইনজীবীদের কাছে প্রস্তাব দেন, সপ্তাহে কোনও এক দিন কিছু সময়ের জন্য মৃত আইনজীবীদের প্রতি শোকপালন করা যেতে পারে। আইনজীবীরা যেন প্রস্তাব ভেবে দেখেন।
এর পরে প্রধান বিচারপতি ওই আইনজীবীদের জানান, সুপ্রিম কোর্ট বা মুম্বই ও মাদ্রাজ হাইকোর্টের বিচারপতিদের সঙ্গে তাঁর যখন দেখা হয়, সেই সময় সেখানকার বিচারপতিরা তাঁর কাছে জানতে চান, এখনও সকাল সাড়ে ১০টা বা বিকেল সাড়ে ৩টে থেকে কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবীদের কর্মবিরতি পালন চালু রয়েছে কি না। প্রধান বিচারপতির ওই কথা বলা শেষ হতেই ডিভিশন বেঞ্চের অন্য বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী প্রবীণ আইনজীবীদের উদ্দেশে জানান, মাদ্রাজ বা মুম্বই হাইকোর্টে এই ধরনের কর্মবিরতি পালন সম্ভবত নেই।
দু’মাস বন্ধ থাকার পরে ফের কেন চালু হল কর্মবিরতি? কলকাতা হাইকোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক রানা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সোমবার সাড়ে ৩টে থেকে কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত সর্বসম্মত। আমি একা সিদ্ধান্ত নিইনি। যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা কেবল জানিয়ে দিয়েছি।’’