প্রশাসনের সহযোগিতায় তৈরি কৃত্রিম জলাশয়ে ছটপুজোর রীতিনীতি পালন করছেন পুণ্যার্থীরা। নিজস্ব চিত্র।
পরিবেশ রক্ষায় ত্রাতা আবারও সেই আদালত। পরিবেশকর্মীদের আবেদন সত্ত্বেও পুলিশ-প্রশাসনের সামনেই জোর করে সুভাষ এবং রবীন্দ্র সরোবরে ঢুকে ছট পুজো হচ্ছিল বিগত কয়েক বছর ধরে। কিন্তু এ বার সেই বিশৃঙ্খলার ছবি ধরা পড়েনি দুই সরোবরের কোথাও। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশেই শেষ পর্যন্ত বাঁচল পরিবেশ, এমনটাই মত পরিবেশকর্মীদের।
শুক্রবার সকালে সাময়িক উত্তেজনা দেখা গেলেও দিনভর কোনও অশান্তি হয়নি দুই সরোবরকে কেন্দ্র করে। পুণ্যার্থীরা দুই সরোবর এড়িয়ে কৃত্রিম জলাশয়ে পুজোর রীতিনীতি পালন করেন বেশির ভাগই। অনেকে আবার গঙ্গায় পুজো সেরেছেন। কেউ কেউ আবার বাড়িতেই পুজো সারেন। আদালতের নির্দেশে দুর্গাপুজো এবং কালী পুজোও নিয়ন্ত্রিত ভাবেই হয়েছিল। মণ্ডপে দর্শক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল। কালী পুজোতেও তেমন বাজি ফাটেনি। করোনা পরিস্থিতিতে সেই ধারা বজায় থাকল ছট পুজোতেও।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবারই পুণ্যার্থীদের কাছে আদালতের নির্দেশ মেনে চলার আবেদন জানিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে তিনি শুভেচ্ছাবার্তাও দেন। মমতা বলেন, “ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পুজোর রীতিনীতি পালন করুন। সরকার এবং প্রশাসন আপনাদের পাশে আছে।” সরকারের এই আবেদনে সাড়াও দিয়েছেন পুণ্যার্থীরা।
আরও পড়ুন: শীতের আমেজ আগামী সপ্তাহে, সোমবার থেকে নামবে তাপমাত্রা, জানাল হাওয়া অফিস
প্রশাসনের সহযোগিতায় কলকাতা এবং সংলগ্ন দেড় হাজার কৃত্রিম জলাশয় তৈরি করা হয় ছটপুজোর জন্য। সেই জলাশয়ই ব্যবহার করেন বহু মানুষ। এ দিন সকালে রবীন্দ্র সরোবরের ৩ নম্বর গেটে বেশ কিছু যুবক ছটপুজোর দাবিতে সরব হলেও পরে কাউকেই দেখা যায়নি রবীন্দ্র এবং সুভাষ সরোবরের আশপাশে। পুলিশ-প্রশাসন সব রকম ব্যবস্থা নিয়েছিল। ফলে তেমন কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। যা প্রশাসনের কাছেও একটা স্বস্তি।
জাতীয় পরিবেশ আদালত আগেই নির্দেশ দিয়েছিল, দুই সরোবরেই কোনও ভাবে ছটপুজো করা যাবে না। এমনকি হাইকোর্টও সেই বিষয়টি নিশ্চিত করে। যদিও কেএমডিএ-র তরফে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানানো হয়েছিল শর্তাসাপেক্ষে পুজো করতে দেওয়া হোক। কিন্তু বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয় এই নিয়মের কোনও বদল হবে না। দুই সরোবরে ছটপুজো করা যাবে না। আদালতেরে এই নির্দেশের পরেই দুই সরোবরে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়।