লালবাজার। ফাইল চিত্র
শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক হওয়ায় বাবাকে নিয়ে বাইপাসের ধারে একটি হাসপাতালে গিয়েছিলেন ছেলে অয়ন দেবনাথ। কিন্তু সেখানে শয্যা না থাকায় বাবাকে নিয়ে যান শহরের আর একটি বেসরকারি হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে তিনি আর্থিক প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে স্বাস্থ্য কমিশনে অভিযোগ জানান অয়ন। সোমবার সেই মামলার শুনানিতে ঘটনার তদন্তের ভার লালবাজারের ডেপুটি কমিশনারের (গোয়েন্দা দফতর) হাতে দিয়েছে কমিশন।
এ দিন কমিশনের চেয়ারম্যান অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ঘটনাটি জালিয়াতি। এর সঙ্গে আরও অনেকে যুক্ত থাকতে পারেন। যাঁরা জড়িত, তাঁদের সামনে আনা উচিত। তাই কলকাতার ডিসি ডিডি-কে তদন্ত করতে বলা হয়েছে।’’
কমিশন সূত্রের খবর, গত বছর এপ্রিলে স্ট্রোকে আক্রান্ত হন অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক নারায়ণ দেবনাথ। তাঁকে নিয়ে বাইপাসের ওই বেসরকারি হাসপাতালে যান অয়ন। অভিযোগ, সেখানে কাউন্টারে এক কর্মী টালিগঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালের নম্বর দেন। সেই নম্বরে যোগাযোগ করা হলে এক ব্যক্তি নিজেকে ওই হাসপাতালের ম্যানেজার পরিচয় দিয়ে কথা বলেন এবং তাঁর কথা মতো সেই হাসপাতালে বাবাকে নিয়ে যান অয়ন।
কমিশনের কাছে অভিযোগে অয়ন জানিয়েছেন, ওই হাসপাতালে প্রথমে ১৫ হাজার ও পরে ৫০ হাজার টাকা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে দেয় নারায়ণবাবুর পরিবার। সেখানে পাঁচ দিন চিকিৎসা চলার পরে ওই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। অভিযোগ, তখন আরও ৭৫ হাজার টাকা দাবি করা হলে তা-ও চেকের মাধ্যমে ওই ম্যানেজারকে দেন অয়ন। বদলে একটি রসিদ মেলে। বিমা সংস্থার কাছে এর পরে চিকিৎসার জন্য মোট খরচ হওয়া এক লক্ষ ৪০ হাজার টাকা ফেরত পেতে সেই হাসপাতালের বিল জমা করেন অয়ন। তখনই জালিয়াতির বিষয়টি জানা যায়।
হাসপাতাল থেকে অয়ন জানতে পারেন, তাঁর বাবার চিকিৎসার মোট বিল হয়েছিল ৭৫ হাজার ২৪২ টাকা। শেষের চেকটি হাসপাতাল পায়নি। আর ওই ম্যানেজার পরিচয় দেওয়া ব্যক্তিটি কে, সেটাও তাঁরা জানেন না বলেই দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। কিন্তু হাসপাতালেরই একটি ঘরে বসা ওই ব্যক্তির পরিচয় অস্বীকার করাকে সন্দেহের চোখে দেখছে কমিশন।