ফাইল চিত্র।
শহরে অবৈধ নির্মাণ রুখতে পুলিশের সক্রিয়তা তেমন চোখে পড়ে না, এমনই অভিযোগ নাগরিকদের একটি বড় অংশের। একই মত পুলিশের একাংশেরও। কিন্তু সেই পুলিশকর্মীরাই এখন বলছেন, অবৈধ নির্মাণের মামলায় গাফিলতি থাকলে সম্প্রতি পুর আদালত পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধেও শাস্তির নির্দেশ দিতে শুরু করেছে। আর তার জেরেই তটস্থ পুলিশ আধিকারিকদের অনেকেই।
পুর আদালতে সিনিয়র ম্যাজিস্ট্রেট প্রদীপকুমার অধিকারীর এজলাসে সম্প্রতি একাধিক মামলায় পুলিশি গাফিলতির বিষয়টি ধরা পড়েছে। পোস্তার একটি মামলায় দেখা যায়, যিনি অভিযুক্ত, তিনিই সাক্ষী! বহু মামলায় তদন্ত শেষ হওয়ার দু’বছরেরও পরে চার্জশিট জমা পড়েছে। কোথাও তদন্ত না-করেই চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ।
এমন ঘটনা দেখলেই তদন্তকারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিচ্ছেন বিচারক প্রদীপবাবু। সংশ্লিষ্ট থানার ওসি এবং তদন্তকারী অফিসারকে আদালতে হাজিরা দিতেও বলা হচ্ছে। বাদ যাচ্ছেন না তদন্তের তদারকির দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনারও। বিভাগীয় ডিসি-দেরই এই নির্দেশ কার্যকর করতে বলা হচ্ছে। তদন্তে গাফিলতি চিহ্নিত করে পুনরায় তদন্তেরও নির্দেশ দিচ্ছে আদালত।
এক পুলিশকর্তার মতে, গুরুত্বপূর্ণ মামলার তদন্তে গাফিলতি থাকলে ফৌজদারি আদালত বা হাইকোর্টের কোপে পড়ার আশঙ্কা থাকে। কিন্তু পুর আদালতও যে কড়া পদক্ষেপ করতে পারে, তা ভাবেননি আধিকারিকদের অনেকেই। ‘‘এখন অফিসারেরা সকলেই অবৈধ নির্মাণের তদন্ত নিয়ে অতি সতর্ক,’’ মন্তব্য ওই পুলিশকর্তার।
বিভিন্ন থানার ওসি-দের অনেকেই এত দিন অবৈধ নির্মাণের মামলাকে গুরুত্ব দিতেন না। মামলার অগ্রগতির খবরও রাখতেন না অনেকে। পুলিশের একাংশের দাবি, তদন্তকারী হিসেবেও বহু সময়ে যোগ্য আধিকারিককে নিয়োগ করা হত না। তাই সময়মতো চার্জশিট দেওয়া হত না বা তদন্তের পরেও চার্জশিট পড়ে থাকত।
অনেকেরই অভিযোগ, পুলিশকর্মীদের একাংশের সঙ্গে নির্মাণ ব্যবসায়ীদের ‘সুসম্পর্ক’ রয়েছে। আবার পুলিশ সূত্রের খবর, পুরসভা অভিযোগ করার পরে তারাই নির্মাণে নিয়মভঙ্গের নথি দেয়। সেই অনুযায়ী চার্জশিট তৈরি হয়। কিন্তু পুলিশ নিজে থেকে কেন তদন্ত করে না, সেই প্রশ্নও উঠেছে।