ঝামেলা: পুর অধিবেশনে হট্টগোল। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
ডেঙ্গি দমনে ব্যর্থ কলকাতা পুরসভা— এমন অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার পুর ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখানোর কর্মসূচি নিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু পুর ভবনে যাওয়ার আগেই পুলিশ জলকামান দিয়ে তাদের আটকে দেয়। শুক্রবার পুরসভার মাসিক অধিবেশনে একই অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখালেন বিজেপির পাঁচ কাউন্সিলর। কিন্তু তাঁদের চিৎকার চাপা পড়ে গেল শাসকদলের কাউন্সিলরদের আওয়াজে। শেষমেশ শাসকদল তাঁদের কণ্ঠরোধ করেছে, এই বলে অধিবেশন কক্ষ বয়কট করলেন বিজেপির কাউন্সিলরেরা। মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘এখন ওঁরা সবেতেই নাটক করছেন সংবাদমাধ্যমে আসার জন্য।’’
এ দিন পুরসভার অধিবেশনে আটটি প্রস্তাবের মধ্যে তিনটি ছিল ডেঙ্গি প্রতিরোধে পুরসভার ভূমিকার সমালোচনা করে। কংগ্রেস কাউন্সিলর প্রকাশ উপাধ্যায়, সিপিএমের চয়ন ভট্টাচার্য এবং মৃত্যুঞ্জয় চক্রবর্তীরা প্রস্তাবে ডেঙ্গি দমনে পুরসভা এক দিকে তথ্য চাপছে, অন্য দিকে বিরোধী দলের কাউন্সিলরদের কথায় গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন। সে সময়ে বিজেপি কাউন্সিলর মীনাদেবী পুরোহিত হঠাৎ একটি পোস্টার নিয়ে পোডিয়ামে উঠে তা দেখাতে চেষ্টা করেন। তখনই শাসকদলের কাউন্সিলরেরা চিৎকার শুরু করে দেন। মীনাদেবীর হাত থেকে সেটি কাড়ার চেষ্টা হয়। বচসা শুরু হয় দু’পক্ষের। চেয়ারপার্সন মালা রায় মীনাদেবীকে বলতে থাকেন, ‘‘আপনাকে বারণ করা হয়েছিল এটা না নিতে। অধিবেশন কক্ষের নিয়ম ভাঙছেন। এটা রাজনীতি করার জায়গা নয়।’’ তত ক্ষণে বিজেপির বিজয় ওঝাও যোগ দিয়েছেন মীনাদেবীর সঙ্গে। সেই পোস্টার খুলে দেখাতে থাকেন তাঁরা।
তা দেখে শাসকদলের পক্ষে রতন মালাকার, অশোকা মণ্ডল, অসীম বসুরা সেই পোস্টার ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে শাসকদলের এক কাউন্সিলর পোস্টারটি নিয়ে পালান। সে সময়ে বিজেপির কাউন্সিলরেরা অধিবেশন কক্ষ বয়কট করেন। মীনাদেবী বলেন, ‘‘ডেঙ্গি প্রতিরোধে ব্যর্থ পুরবোর্ডের জন্য মানুষ মারা যাচ্ছেন।’’ পরে অধিবেশনের বাইরেও প্রতিবাদ শুরু করেন। তবে বাম এবং কংগ্রেস কাউন্সিলরেরা ডেঙ্গি নিয়ে তোলা প্রস্তাব মন দিয়ে শুনেছেন।
পরে শাসকদলের মেয়র পারিষদ বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় তথ্য দিয়ে ডেঙ্গি দমনে পুর বোর্ডের কাজ তুলে ধরেন। শেষে ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ জানান, এ বার শহরে ডেঙ্গিতে ছ’জন মারা গিয়েছেন। তবে এখন ডেঙ্গির প্রকোপ কমছে।