প্রতীকী ছবি
শুরু থেকেই বন্দিদের মধ্যে রীতিমতো জনপ্রিয় ‘রেডিয়ো দমদম’। তবে সেখানেই থেমে থাকতে চায় না কারা দফতর। তাই এ বার দমদম জেলের রেডিয়ো স্টেশনের অনুষ্ঠান সূচিতেও বদল আনছে তারা।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি দমদম সেন্ট্রাল জেলে বন্দিদের জন্য শুরু হয়েছিল রেডিয়ো স্টেশন, যার পোশাকি নাম ‘রেডিয়ো দমদম’। স্থির করা হয়েছিল, প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত তাতে বিভিন্ন অনুষ্ঠান চলবে। সময় এবং মেজাজের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রেডিয়ো স্টেশনের অনুষ্ঠান পরিচালনা করার জন্য বেছে নেওয়া হয় পাঁচ জন রেডিয়ো জকিকে। বাছাই করা প্রায় তিন হাজার গান এবং তার সঙ্গে আবহাওয়া, খেলা-বিনোদন জগতের খবর— সবই শুনতে পাওয়া যায় ‘রেডিয়ো দমদম’-এ। এখনও পর্যন্ত সেই তালিকা ধরেই প্রতিদিন অনুষ্ঠান চলছে। তবে পরিস্থিতি অনুযায়ী সেই অনুষ্ঠানসূচির বদল হতে পারে বলে জানাচ্ছেন কারা কর্তারা।
‘রেডিয়ো দমদম’-এর শুরুর দিনগুলিতে যেমন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত টানা দশ ঘণ্টা অনুষ্ঠান চলত, এখন অবশ্য তেমনটা আর হচ্ছে না। তার বদলে দু’ভাগে গান ও খবরাখবর শুনতে পাচ্ছে জেলে থাকা বন্দিরা। প্রথমার্ধে সকাল ৭টা থেকে সাড়ে ১০টা-১১টা পর্যন্ত এবং দ্বিতীয়ার্ধে দুপুর আড়াইটে-৩টে থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অনুষ্ঠান চলছে ওই রেডিয়ো স্টেশনে।
কিন্তু কেন এই পরিবর্তন? কারা কর্তাদের মতে, মন ভাল করতে গানের জুড়ি নেই বটে, তবে সর্বক্ষণ বাজিয়ে গেলে কারও ভাল না-ও লাগতে পারে। সাধারণত এফএম স্টেশনগুলির ক্ষেত্রে কোনও শ্রোতার কাছে তা শোনা বা না-শোনার স্বাধীনতা থাকে। কিন্তু বন্দিদের ক্ষেত্রে সেই স্বাধীনতা নেই। কারণ, ‘রেডিয়ো দমদম’ স্টেশনটি কেন্দ্রীয় ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়। সারা জেলের মধ্যে প্রায় একশোটি স্পিকারের মাধ্যমে বন্দিদের কানে সেই অনুষ্ঠান পৌঁছে দেওয়া হয়। তাই বন্দিদের পছন্দ-অপছন্দের কথা মাথায় রেখেই সময় পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত। ‘‘রেডিয়ো স্টেশনটি অনেক বন্দির কাছে জনপ্রিয়। তবে একঘেয়েমি কাটাতে যখন গানকেই হাতিয়ার করা হচ্ছে, সেখানে গান শোনার ফলে একঘেয়েমি বাড়ুক, তা কোনও ভাবেই কাম্য নয়।’’—বলছেন এক কারা কর্তা।
বর্তমানে দমদম জেলে পুরুষ এবং মহিলা মিলিয়ে মোট বন্দির সংখ্যা রয়েছে প্রায় তিন হাজার ৯০০ জন। সাজা শেষ হয়ে গেলেও পূর্ণাঙ্গ নথিপত্র তৈরি না হওয়ায় জেলে ‘রিলিজড প্রিজনার’ও রয়েছে প্রায় তিনশো জন। তাদের সকলের কাছে গান এবং বিভিন্ন খবরাখবর পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যম এই ‘রেডিয়ো দমদম’।
তবে বন্দিদের মধ্যে এর জনপ্রিয়তা দেখে ধাপে ধাপে তা রাজ্যের অন্য জেলেও চালু করার কথা আগেই জানিয়েছেন কারা কর্তারা। প্রথমে সেন্ট্রাল জেলে এবং পরে জেলার জেলগুলিতেও গান শুনিয়ে বন্দিদের চাঙ্গা রাখতে রেডিয়ো স্টেশন শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।