—প্রতীকী চিত্র।
ভারী বৃষ্টিতে কলকাতায় জল জমা ঠেকানো-সহ একাধিক প্রকল্পের জন্য কেন্দ্রের থেকে ৫০০ কোটি টাকা অনুদান পেল কলকাতা পুরসভা। পঞ্চদশ অর্থ কমিশন কলকাতা পুরসভাকে এই টাকা মঞ্জুর করেছে বলে জানা গিয়েছে।
জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের ডাকা দিল্লির ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন কলকাতা পুরসভার কমিশনার বিনোদ কুমার এবং পুরসভার ডিজি (নিকাশি) শান্তনু ঘোষ। সেই সময়েই শহরের উন্নয়নমূলক কাজের যাবতীয় প্রকল্প রিপোর্ট কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের সচিবের কাছে পেশ করেন পুর কর্তৃপক্ষ। কলকাতা পুরসভার এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘পুরসভার প্রকল্প রিপোর্টে খুশি কেন্দ্রের কর্তারা। পুজোর পরেই একাধিক প্রকল্পের কাজ শুরু করতে দরপত্র ডাকবে পুরসভা। আড়াই বছরের মধ্যে কাজ শেষের আশা করা হচ্ছে।’’
ওই টাকায় কী কী কাজ হবে? কলকাতা পুরসভা জানিয়েছে, শহরে ভারী বৃষ্টি হলে জমা জল বার করতে একাধিক জায়গায় পাম্পিং স্টেশন তৈরি হবে। ভারী বৃষ্টি ও জোয়ারের সময়ে দইঘাট অর্থাৎ, গঙ্গা ও টালি নালার সংযোগস্থল সংলগ্ন ৩১টি ওয়ার্ডের বেশ কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়। এই সমস্যার সমাধানে গঙ্গা ও টালি নালার সংযোগস্থলে ব্যারেজ ও পাম্পিং স্টেশন তৈরি হবে। এক পুর আধিকারিক জানান, বৃষ্টি ও জোয়ারের সময়ে গঙ্গার জল যাতে টালি নালায় ঢুকতে না পারে, তার জন্য ওই সংযোগস্থলে ব্যারেজ হবে। নিকাশি পাম্পিং স্টেশনও হবে। যার মাধ্যমে টালি নালার ভিতর থেকে জল গঙ্গায় ফেলা হবে। প্রয়োজনে গঙ্গার জল টালি নালায় ফেলা হবে। শুধু এই প্রকল্পের জন্যই পুরসভাকে ১৫১ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছে কেন্দ্র।
ঠনঠনিয়া, নর্দার্ন পার্ক, হৃষীকেশ পার্ক, ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাইপাস লাগোয়া গুলশন কলোনি ভারী বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়ে। ওই সব এলাকা থেকে জমা জল বার করতে নতুন পাম্পিং স্টেশন তৈরি করা হবে। এমনকি, দমদম রোডের নিকাশি ব্যবস্থায় জোর দিতেও প্রকল্প নেওয়া হয়েছে বলে দাবি কলকাতা পুরসভার।
এ ছাড়াও শহরের বিভিন্ন খালের সংস্কার হবে। কলকাতায় ছোট-বড় মিলিয়ে ২৬টি খাল রয়েছে। যার মোট দৈর্ঘ্য ২১৫ কিলোমিটার। পুরসভার নিকাশি দফতর সূত্রের খবর, সেচ দফতর মূল ১৩টি খাল ইতিমধ্যেই সংস্কার করেছে। বাকিগুলি সংস্কার হবে কেন্দ্রের টাকায়। কলকাতা পুরসভার সংযোজিত এলাকা জোকায় ৩৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একাধিক ছোট খাল রয়েছে। সেগুলি সংস্কারের অভাবে এলাকাবাসীর দুর্ভোগের কারণ হয়েছে। পুরসভা জানাচ্ছে, কেন্দ্রের টাকায় জোকার খালগুলি সংস্কার করে চড়িয়াল খালে মেশানো হবে। ডিজি (নিকাশি) শান্তনু ঘোষ বলেন, ‘‘জোকার নিকাশি ব্যবস্থার উন্নয়নে খালগুলির আমূল সংস্কার হবে।’’
কেন্দ্রীয় অনুদানের টাকায় সবুজায়নেও জোর দেওয়া হবে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। শহরের খালগুলির দু’ধারে গাছ লাগানো হবে। পাঁচটি ওয়ার্ডের পাঁচটি পুকুর দীর্ঘ বছর সংস্কার হয়নি, সেগুলির সংস্কার করে সৌন্দর্যায়ন করা হবে।