দিনের শেষে মুখ খুলল মাদার হাউস। —ফাইল চিত্র।
মাদার টেরিজা প্রতিষ্ঠিত ‘মিশনারিজ অব চ্যারিটি’র ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ ঘিরে দিনভর দাবি, পাল্টা-দাবির শেষে মুখ খুলল মাদার হাউস। জানানো হল, কেন্দ্র ‘মিশনারিজ অব চ্যারিটি’র কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেনি। বরং, সংস্থার পক্ষ থেকেই সব শাখাকে বিদেশি মুদ্রা সংক্রান্ত লেনদেন বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। তবে এটা ঠিক যে, বিদেশি মুদ্রা লেনদেন সংক্রান্ত যে কেন্দ্রীয় ছাড়পত্র প্রয়োজন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। গত ২৫ ডিসেম্বর সেই ছাড়পত্রের পুনর্নবিকরণ স্থগিত রেখেছে সরকার। আর সে কারণেই আপাতত কোনও রকম বিদেশি মুদ্রার লেনদেন না করার সিদ্ধান্ত সংস্থার তরফে নেওয়া হয়েছে।
সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র টুইটারে দাবি করেন, কেন্দ্র ২৫ ডিসেম্বর ‘মিশনারিজ অব চ্যারিটি’র সব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে। এর ফলে সংস্থার কর্মীরা সমস্যায় রয়েছেন। সংস্থার পরিষেবার আওতায় থাকা হাজার হাজার রোগীরা খাবার এবং ওষুধ পাচ্ছেন না। এ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হতে না-হতেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টই সরকারের তরফে বন্ধ করা হয়নি। বরং, ‘মিশনারিজ অব চ্যারিটি’ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার কাছে অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার আর্জি জানায়। তবে সাহায্য হিসেবে বিদেশি মুদ্রা নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কেন্দ্রীয় অনুমোদন দেওয়া হয়নি ‘মিশনারিজ অব চ্যারিটি’কে। সেটা কিছু শর্ত পূরণ না হওয়ার জন্যই বলে দাবি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের।
প্রসঙ্গত, সোমবার দুপুরে এমন খবর জানা যায় যে, ‘মিশনারিজ অব চ্যারিটি’র সব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে সংস্থা কোনও রকম আর্থিক লেনদেন করতে পারছে না। যদিও প্রথম থেকেই এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি কলকাতার মাদার হাউস কর্তৃপক্ষ। তবে এই খবর সামনে আসার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই বিস্ময় প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি টুইটারে লেখেন, ‘বড়দিনের উৎসবের মধ্যে মাদার টেরিজার মিশনারিজ অব চ্যারিটির সব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট কেন্দ্রীয় সরকার বন্ধ করে দিয়েছে শুনে আমি বিস্মিত।’ মমতার পাশাপাশি সূর্যকান্তও টুইটারে লিখেছেন, ‘মিশনারিজ অব চ্যারিটির ২২ হাজার রোগী এবং কর্মীরা খাবার, ওষুধ ছাড়া রয়েছেন।’ মমতা সেই সঙ্গে লেখেন, ‘আইন সবার উপরে হলেও মানবিক কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যাওয়া ঠিক নয়।’ কেন্দ্রের নিন্দা করে টুইট করেন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন।
শেষে কেন্দ্রের তরফে গোটা ঘটনার ব্যাখ্যা দেওয়া হলে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘এ জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষমা চাওয়া উচিত। ’’ একই সঙ্গে তাঁর দাবি, এই ঘটনা থেকে প্রমাণিত যে, ধর্মীয় বিভাজনের রাজনীতি করছে তৃণমূল।
এ নিয়ে টুইট করেছেন রাজ্য বিজেপি-র সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য।