প্রতীকী ছবি।
কথা ছিল, কলকাতা পুরসভার ৫৯টি ওয়ার্ডে হবে। হয়েছে মাত্র ছ’টি ওয়ার্ডে! ফলে ২০২২-’২৩ অর্থবর্ষে ‘হেলথ অ্যান্ড ওয়েলনেস সেন্টার’ বা সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র তৈরির লক্ষ্যমাত্রার ধারেকাছে পৌঁছতে পারেননি কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষ। গত মাসের শেষে এসে এ রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকে বসে এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ। এর পরেই রিপোর্টে সামনে আসে, জমিজটের কারণে সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র তৈরিতে পিছিয়ে কলকাতা।
সূত্রের খবর, রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম কলকাতা পুরসভার পিছিয়ে থাকার কারণ জানতে পুর কমিশনার বিনোদ কুমারের কাছে রিপোর্ট তলব করেছেন। পুর কমিশনার এর বিস্তারিত কারণ জানতে চান পুরসভার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের থেকে। দিন কয়েক আগে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কমিশনারকে রিপোর্টে জানান, মূলত জমিজটের কারণে শহর কলকাতা সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র নির্মাণে পিছিয়ে রয়েছে।
বর্তমানে কলকাতা পুর এলাকায় ১৪৪টি ওয়ার্ডের প্রত্যেকটিতে স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে। কিন্তু ওয়ার্ডের বিস্তার এতটাই বড় যে দূর-দূরান্তের মানুষ একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে পরিষেবা পেতে হিমশিম খান। কলকাতার প্রতিটি ওয়ার্ডে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা পঞ্চাশ হাজার থেকে এক লক্ষের বেশি। কেন্দ্রের নীতি অনুযায়ী, পনেরো হাজার নাগরিকপিছু একটি সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র থাকার কথা। এই সমস্ত সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলি থেকে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মতোই পরিষেবা মিলবে। কেবল রক্তপরীক্ষা থেকে যাবতীয় পরীক্ষা হবে ওয়ার্ডের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে।
জাতীয় স্বাস্থ্যনীতির আওতায় ২০১৭ সালে সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ার পরিকল্পনা করে কেন্দ্রীয় সরকার। যা স্যাটেলাইট হেলথ সেন্টার বলেও পরিচিত। দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন খাতে রাজ্যকে বিপুল টাকা বরাদ্দ করে কেন্দ্র। অথচ শহরে পর্যাপ্ত সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র এখনও তৈরি না হওয়ায় কেন্দ্রের কাছে ভর্ৎসিত হতে হল কলকাতা পুরসভাকে। পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য নীতি অনুযায়ী, প্রত্যেকটি ওয়ার্ডের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বিকেলে পলিক্লিনিক খোলার কথা। সেই মতো ২০২২-’২৩ অর্থবর্ষে পুর এলাকার ১৭টি ওয়ার্ড স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পলিক্লিনিক শুরুর কথা। কিন্তু, মাত্র একটি ওয়ার্ডে চালু হয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিবের কাছে সমালোচিত হওয়ায় পুরসভা স্যাটেলাইট হেলথ সেন্টার বা সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র তৈরির জন্য জমি খুঁজতে নেমেছে। এ জন্য গত সপ্তাহেই মেয়র পরিষদের বৈঠকে জমি খুঁজতে প্রত্যেক বিভাগের আধিকারিককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘কলকাতায় জমি বা জায়গা পেতে সমস্যা হচ্ছে।। আরও ১১টি স্যাটেলাইট হেলথ সেন্টার তৈরির কাজ চলছে। এ মাসেই কয়েকটির উদ্বোধন হবে।’’ পলিক্লিনিক চালুর প্রসঙ্গেও আশ্বাস দিয়েছেন পুরসভার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুব্রত রায়চৌধুরী।