Municipality Recruitment Case

কেন দাঁড়িয়ে আছেন? সুজিতের পাড়ায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর রুট মার্চ, জটলায় লাঠি উঁচিয়ে নির্দেশ

লেক টাউনের শ্রীভূমিতে দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর পাড়ায় সকাল থেকে লাঠি, বন্দুক নিয়ে টহল দিচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। চলছে রুট মার্চ। এলাকায় জটলা করতে দেওয়া হচ্ছে না। জমায়েত সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২৪ ১২:২০
Share:

লেক টাউনে সুজিত বসুর বাড়ির সামনে কেন্দ্রীয় বাহিনী। — নিজস্ব চিত্র।

রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর এলাকায় বৃহস্পতিবার সকাল সকাল যেন ভোটের তৎপরতা। হাতে লাঠি, কাঁধে বন্দুক ঝুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। এলাকায় জমায়েত করতে দেওয়া হচ্ছে না। কোথাও সামান্য ভিড় জমতে দেখলেই তাঁরা এগিয়ে যাচ্ছেন। গিয়ে জিজ্ঞাসা করছেন জমায়েতের কারণ। তার পর জমায়েত এলাকা থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এলাকায় সকাল থেকে অনবরত টহল দিচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। রাজ্যে বিধানসভা কিংবা পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়ে এই ছবি দেখা যায়। বহিরাগতের প্রবেশ ঠেকাতে এবং ভোটারদের মনোবল বৃদ্ধি করতে এ ভাবেই অস্ত্র নিয়ে টহল দেয় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা।

Advertisement

বৃহস্পতিবার ভোরবেলায় লেক টাউনের শ্রীভূমি এলাকায় সুজিতের বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছিল ইডি। একই এলাকায় তাঁর দু’টি বাড়ি রয়েছে। পুর নিয়োগ ‘দুর্নীতি’ মামলায় তদন্ত করতেই ওই দুই বাড়িতে চলছে তল্লাশি। তবে এ বার আটঘাট বেঁধেই মাঠে নেমেছে ইডি। কিছু দিন আগে সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে তাদের যা অভিজ্ঞতা হয়েছিল, সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার প্রস্তুত হয়ে এসেছেন আধিকারিকেরা। তাঁদের সঙ্গে সিআরপিএফের সংখ্যা এ বার তুলনায় অনেকটাই বেশি।

সকাল থেকে দেখা গিয়েছে, এলাকায় টহল দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। তাঁদের সঙ্গে লাঠি, বন্দুক ছাড়াও রয়েছে টিয়ার গ্যাসের সেল। কোথাও জটলা দেখলেই তাঁদের প্রশ্ন, ‘কেন এখানে দাঁড়িয়ে আছেন?’ অর্থাৎ, কোথাও লোক জড়ো হতে দিতে চাইছে না ইডি। এমনকি, মন্ত্রীর বাড়ির সামনে কাউকে অকারণে বসে থাকতে দেখলেও সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

Advertisement

সন্দেশখালিতে তাঁদের অভিযোগ ছিল, শাহজাহানের বাড়িতে ঢোকার আগেই বাইরে ৮০০ থেকে ১০০০ লোক জড়ো হয়ে গিয়েছিল। ইডির অনুমান, ভিতর থেকে ফোন করে অনুগামীদের ডেকেছিলেন শাহজাহান নিজে। তার পর পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন। সে দিন বিক্ষুব্ধ জনতার হাতে মার খেতে হয়েছিল ইডি আধিকারিকদের। তিন জনকে হাসপাতালেও ভর্তি করানো হয়েছিল। শাহজাহানের খোঁজ মেলেনি এখনও।

শ্রীভূমি সুজিতের এলাকা। সেখানে তিনি যথেষ্ট প্রভাবশালী। ফলে তাঁর অনুগামীর সংখ্যাও এলাকায় কম নয়। সন্দেশখালির মতো সুজিতের জন্যও শ্রীভূমিতে ইডির বিরুদ্ধে লোক জড়ো হয়ে যেতে পারে, আগেই তার জন্য প্রস্তুত হয়ে এসেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। যাঁরা এলাকায় টহল দিচ্ছেন, তাঁদের প্রত্যেকের মাথায় রয়েছে হেলমেট। কেউ আক্রমণ করলে মাথায় যাতে গুরুতর আঘাত না লাগে, তার জন্য এই ব্যবস্থা।

এর আগে রেশন থেকে শুরু করে শিক্ষক নিয়োগ কিংবা পুর নিয়োগ, একাধিক ‘দুর্নীতি’ মামলার তদন্তে রাজ্যের মন্ত্রী, বিধায়কদের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়েছিল ইডি। ফিরহাদ হাকিম থেকে শুরু করে মদন মিত্র, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, কারও বাড়িতে তল্লাশি চালাতে ইডি এই প্রস্তুতি নিয়ে যায়নি। প্রতি ক্ষেত্রেই ইডির সঙ্গে কেন্দ্রীয় জওয়ানদের সংখ্যা ছিল নামমাত্র। যেখানে তল্লাশি চলছে, সেই বাড়ির সামনে কয়েক জন জওয়ান পাহারায় থেকেছেন। এই প্রথম দেখা যাচ্ছে, ইডির তল্লাশিকে কেন্দ্র করে গোটা এলাকায় রুট মার্চ করছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। তারা এলাকায় তাদের উপস্থিতি জানান দিচ্ছে। কেন্দ্রীয় সংস্থার তল্লাশি অভিযানকে কেন্দ্র করে এই সক্রিয়তা নজিরবিহীন।

পুর মামলায় বৃহস্পতিবার বরানগরের বিধায়ক তাপস রায়ের বাড়িতেও গিয়েছে ইডি। সকাল থেকে সেখানে তল্লাশি চলছে। এ ছাড়া বিরাটীতে উত্তর দমদম পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা কাউন্সিলর সুবোধ চক্রবর্তীর বাড়িতেও হানা দিয়েছে ইডি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement