ফাইল চিত্র
পেশায় সরকারি হাসপাতালের নার্স, বছর বিয়াল্লিশের কোভিড-জয়ী মহিলা, তবু তাঁর মন ভাল নেই। মহিলার কথায়, ‘‘সকলের সামনে হাত বার করতে পারছি না। ত্বক খসখসে হয়ে গিয়েছে।’’
তেঘরিয়ার এক বাসিন্দা আবার করোনা থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও বাড়ির চার সদস্য আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। তাঁদের এক জনের অবস্থা সঙ্কটজনক। সিসিইউ-এ তাঁর চিকিৎসা চলছে। কেমন আছেন আপনি? মহিলার উত্তর, ‘‘অসম্ভব মানসিক চাপে আছি। সকলেই হাসপাতালে ভর্তি। নিজের শরীর ভাল নেই। কারও সঙ্গে কথা বলে যন্ত্রণা ভাগ করতে পারছি না।’’
এই দু’টি পরিস্থিতি ভিন্ন হলেও কোভিড থেকে সুস্থ হওয়ার পরে মানসিক চাপ কাটিয়ে উঠতে পারছেন না এঁদের মতো অনেকেই। মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা হওয়ায় শারীরিক জটিলতাও বাড়ছে। এঁদের কথা ভেবে কলকাতা পুরসভার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কাউন্সেলিং পরিষেবা চালু করতে চলেছে কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্ক (সিসিএন)। ‘আলো’ নামে সেই পরিষেবার নোডাল চিকিৎসক সুজিত সরখেল জানান, করোনা পরবর্তী অধ্যায়ে রোগীর বিভিন্ন মনস্তাত্ত্বিক সমস্যার কারণ হয়, বেসরকারি হাসপাতালে বিপুল টাকার ধাক্কা। নয়তো প্রিয়জনকে হারিয়ে একাকিত্ব। পরিবারের সদস্য করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরে আত্মীয়-প্রতিবেশীর বিরূপ আচরণও সমস্যার কারণ।
তাঁদের কাছে পৌঁছনোর লক্ষ্য নিয়ে সেপ্টেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে এই পরিষেবা চালু হবে। রোগী সিসিএনের হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাউন্সেলিং করবেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যেরা। সুজিতের কথায়, “পরিষেবার অন্য দিকটি হল কোভিড আতঙ্কে মনস্তত্ত্বে কী প্রভাব পড়ছে, সেই তথ্যভাণ্ডার তৈরি হওয়ারও সুযোগ হবে এতে।’’ সিসিএনের অন্যতম সদস্য-চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, ‘‘প্রথমে কলকাতা পুরসভার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে পুর এলাকাবাসীকে পরিষেবা দেওয়া হবে। পরে রাজ্যবাসীর জন্যও চেষ্টাও করব।’’