আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। — ফাইল চিত্র।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ কি আরও বিপাকে পড়তে চলেছেন? হাসপাতালে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে যে এফআইআর করেছিল সিবিআই, তাতে নতুন ধারা যোগ করতে চেয়ে মঙ্গলবার আলিপুর আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে তারা। সূত্রের খবর, আর্থিক অনিময়ের অভিযোগে এফআইআরে প্রতারণার ধারা যোগ করার আবেদন করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এর ফলে সন্দীপ-সহ চার অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আরও কড়া ধারায় মামলা হবে।
কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে তদন্তভার হাতে নেয় সিবিআই। গত শনিবার এই অভিযোগ নিয়ে এফআইআর দায়ের করে তারা। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০বি এবং ৪২০ (চিটিং) ধারায় মামলা দায়ের হয়। এফআইআরে নাম ছিল সন্দীপ-সহ চার জনের। সূত্রের খবর, এ বার এফআইআরে ভারতীয় দণ্ডবিধির প্রতারণা ধারা (৪৬৭) যোগ করতে চায় সিবিআই। সেই মতো আদালতে আবেদন করেছে তারা।
গত ৯ অগস্ট সকালে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে এক মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। অভিযোগ ওঠে, ধর্ষণ এবং খুন করা হয়েছে তাঁকে। সেই নিয়ে হইচই পড়ে যায় গোটা দেশে। এই আবহে অভিযোগ উঠেছে, তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে আরজি কর হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতি চলেছে। সেই নিয়ে গত ১৬ অগস্ট রাজ্য সরকারের তরফে একটি সিট গঠন করা হয়েছিল। নেতৃত্বে ছিলেন আইপিএস অফিসার প্রণব কুমার। রাজ্য পুলিশের সিটের উপর আস্থা নেই, এই দাবিতে আরজি করের আর্থিক দুর্নীতির মামলার তদন্তভার ইডিকে দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টে। সেই মামলায় শুক্রবারই বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের একক বেঞ্চ জানিয়েছিল, একাধিক সংস্থা তদন্ত করলে বিষয়টি আরও জটিল ও সময়সাপেক্ষ হতে পারে। এর পরেই সিবিআইকেই আর্থিক দুর্নীতি মামলার তদন্তভার দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল উচ্চ আদালত।
আরজি কর কলেজ ও হাসপাতালে একাধিক বেনিয়মের তত্ত্ব হাই কোর্টে তুলে ধরেছিলেন আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। মর্গ থেকে দেহ উধাও হওয়ার অভিযোগ থেকে শুরু করে ‘মেডিক্যাল ওয়েস্ট’ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠে এসেছে। প্রশ্ন ওঠে সন্দীপের ভূমিকা নিয়েও। তাঁর বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছেন হাসপাতালের প্রাক্তন অতিরিক্ত সুপার আখতার আলি। তিনিই আরজি কর হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতি মামলায় ইডি ও সিবিআইকে দিয়ে তদন্ত করাতে চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সেই আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের মামলায় নতুন ধারা যোগ করতে চাইছে সিবিআই।