নিজাম প্যালেসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে আরজি করের ফরেন্সিক বিভাগের শিক্ষক দেবাশিস সোমকে। গ্রাফিক— সনৎ সিংহ
আরজি করের ফরেন্সিক শিক্ষক দেবাশিস সোমকে নিজাম প্যালেসে নিয়ে গেল সিবিআই। তাঁকে আরজি করের আর্থিক অনিয়মের তদন্তে জেরা করা হতে পারে। রবিবার সকালে ওই মামলার সূত্রেই কেষ্টপুরে দেবাশিসের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়েছিল সিবিআইয়ের একটি দল। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত তল্লাশি চালানোর পরে বিকেল ৪টে নাগাদ দেবাশিসকে নিয়ে তাঁর বাড়ি থেকে বার হয় সিবিআই। তার পরে তারা পৌঁছয় নিজাম প্যালেসে।
দেবাশিস আরজি করের ফরেন্সিক বিভাগের সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে যুক্ত। ওই বিভাগের ডেমনস্ট্রেটর পদে রয়েছেন তিনি। এ ছাড়া, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের কাউন্সিলেরও সদস্য তিনি। রয়েছেন কলেজের ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের (এনএমসি) কমিটিতেও। এর পাশাপাশিই দেবাশিসের আরও একটি পরিচয় রয়েছে। তিনি আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ‘ঘনিষ্ঠ’। সম্প্রতি সন্দীপের বিরুদ্ধে আরজি করের জৈব বর্জ্য এবং অন্যান্য বিষয়ে যে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ জানানো হয়েছে কলকাতা হাই কোর্টে। তাতে নাম রয়েছে দেবাশিসেরও। আরজি করের প্রাক্তন সুপার আখতার আলি তাঁদের দু’জনের বিরুদ্ধেই হাই কোর্টে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিলেন।
আরজি কর হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত অনেকে বলছেন, দেবাশিস সন্দীপের অত্যন্ত ‘ঘনিষ্ঠ’। হাসপাতালে তাঁর নিজের বিভাগের ঘরে নাকি তিনি বসতেন না। সন্দীপের ঘরের পাশে একটি ঘর তাঁর জন্য বরাদ্দ ছিল। সেখানে বসেই কাজ চালাতেন। ফরেন্সিক মেডিসিন বিভাগ তিনি ‘নিয়ন্ত্রণ’-এর চেষ্টা করতেন বলেও দাবি করছেন কেউ কেউ। তবে আরজি কর চত্বরে দেবাশিসকে যাঁরা চেনেন, তাঁরা সকলেই একটি বিষয়ে একমত— দেবাশিস ‘বুদ্ধিমান’। দুর্নীতির অভিযোগে নাম থাকলেও সরাসরি দুর্নীতির সঙ্গে তাঁর যোগ না-ও থাকতে পারে। তিনি কিছু করে থাকলে, আড়াল রেখেই করেছেন, মত পরিচিতদের। অনেকে এ-ও বলেছেন যে, ‘‘দেবাশিস বুদ্ধি খাটিয়ে নিজের পিঠ বাঁচিয়ে চলতে জানেন। কাউকে আড়াল করার মানসিকতা তাঁর নেই।’’
দেবাশিসের সম্পর্কে এই ধারণার কারণেই তাই প্রশ্ন উঠেছে, সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে তবে কি তিনি কারও নাম নেবেন? দেবাশিসকে যাঁরা চেনেন, তাঁরা সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না।