প্রতীকী ছবি।
বীরভূমের ময়ূরেশ্বরের মণ্ডলপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চলছিল মিড-ডে মিল বিতরণের কাজ। সে সময়েই ডালের বালতিতে মেলে মৃত সাপ! সঙ্গে সঙ্গেই বন্ধ করে দেওয়া হয় খাবার বিতরণ। অসুস্থ হয়ে পড়ে কয়েক জন ছাত্র।
গত সোমবারের এই ঘটনার পরে মিড-ডে মিল রান্না কী ভাবে হয় এবং সেখানে পরিচ্ছন্নতার হাল কী রকম থাকে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নড়েচড়ে বসেছেন কলকাতা জেলা শিক্ষা দফতরের কর্তারা। কলকাতার স্কুলগুলিতে মিড-ডে মিল তৈরির রান্নাঘরের পরিচ্ছন্নতা নিয়েও এর আগে বহু বার অভিযোগ উঠেছে। এ বার তাই সে সব নিয়েই বৈঠকে বসছেন কলকাতা জেলা শিক্ষা দফতরের কর্তারা। তাঁরা জানাচ্ছেন, কলকাতা জেলার স্কুলগুলিতে মিড-ডে মিলের রান্নাঘরে নজরদারি বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী পোষণ যোজনা থেকে চিঠি এসেছে। তাই চলতি সপ্তাহেই এ নিয়ে বৈঠকে বসতে চলেছেন তাঁরা।
কলকাতার বেশির ভাগ স্কুলেই রান্না করার পৃথক জায়গা নেই। ফলে একটি বড় রান্নাঘরে একসঙ্গে কয়েকটি স্কুলের রান্না হয়। সেই রান্নাঘরকে বলা হয় ‘ক্লাস্টার কিচেন’। সেখান থেকেই রান্না বড় বড় পাত্রে ঢেলে বিভিন্ন স্কুলে পাঠানো হয়। কলকাতা জেলার এক শিক্ষাকর্তা জানান, কলকাতায় মোট ১৩১টি ‘ক্লাস্টার কিচেন’ রয়েছে, যেখান থেকে প্রায় ১৫০০টি স্কুলে খাবার যায়। কলকাতা জেলার শিক্ষা বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এক-একটি বড় রান্নাঘর থেকে ২০-২৫টি স্কুলে খাবার যায়। এই রান্নাঘরগুলি কতটা পরিচ্ছন্ন থাকে, তা খতিয়ে দেখতে রয়েছেন এডুকেশন সুপারভাইজ়ার। তাঁর অধীনস্থ এলাকার স্কুলগুলিতে গিয়ে তিনি বড় রান্নাঘরের অবস্থা খতিয়ে দেখেন।’’
যদিও সূত্রের খবর, কলকাতার এই সব বড় রান্নাঘর নিয়ে অভিযোগ রয়েছে বিস্তর। সেখানে তৈরি খাবারে সাপ না বেরোলেও রান্নাঘরে বেড়াল, টিকটিকির উৎপাত লেগেই আছে। কখনও কখনও রান্না করা খাবারে পড়ে থাকে কাগজের ঠোঙা, পিঁপড়ে। এ ছাড়া, মিড-ডে মিলের চালে নোংরা বা ছোট পাথর তো রয়েইছে। কলকাতা জেলা শিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘মাঝেমধ্যেই এ রকম অভিযোগ পাই। স্কুলের তরফে সেই সব খাবারের ছবি তুলে পাঠানো হয়। আমরা তখনই উপযুক্ত ব্যবস্থা নিই।’’
কলকাতার কিছু স্কুলে আবার মিড-ডে মিল রান্না করার নিজস্ব রান্নাঘর রয়েছে। সেখানেও পরিচ্ছন্নতা কতটা বজায় রাখা হয়, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
প্রাথমিক স্কুলে কোনও ঝাড়ুদার না থাকায় আদৌ রান্নাঘর পরিষ্কার করা হয় কি না, সেই প্রশ্ন বহু বার উঠেছে অভিভাবকদের তরফে। তারাতলা এলাকার একটি প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাকেশ তিওয়ারি বলেন, ‘‘যাঁরা রান্না করেন, আমাদের স্কুলে রান্নাঘর পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্বও তাঁদের। তাঁদের ছেলেমেয়েরা এই স্কুলে পড়ে। তাই তাঁরা রান্নাঘরের পরিচ্ছন্নতা নিয়ে বেশি সতর্ক। তবে এই সতর্কতা আরও বাড়ানো হবে।’’