আমপানে উপড়ে গেছে বহু পুরোনো গাছ।—ছবি এএফপি।
ঘূর্ণিঝড় আমপানের তাণ্ডবে শহরে পড়ে গিয়েছিল প্রায় ১৫ হাজার গাছ। কলকাতা পুর এলাকায় সেই সব উপড়ে যাওয়া গাছ সরানোর কাজ এখনও চলছে। এই পরিস্থিতিতে পুরসভার কাছে নতুন করে অক্ষত গাছ কেটে ফেলা নিয়ে অনুরোধ করছেন শহরবাসীদের একাংশ, যা ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
আমপানে কারণে শহরের বিভিন্ন এলাকায় পড়ে যাওয়া গাছের সঙ্গে সঙ্গে বিপজ্জনক ভাবে হেলে পড়া গাছগুলিকেও কাটা হচ্ছে। অভিযোগ, আমপানের জেরে বাড়ির আশপাশের বা পাড়ার মধ্যে অক্ষত বা অল্প হেলে যাওয়া গাছগুলিকেও কাটার অনুরোধ জানিয়ে ফোন আসছে কলকাতা পুরসভায়। রবীন্দ্রনগর, সরশুনা-সহ বেহালার বেশ কিছু অংশ, গার্ডেনরিচ ইত্যাদি জায়গা থেকে এমন অনুরোধ করে প্রায় ৩০টি ফোন এসেছে। পুর কর্তৃপক্ষ সাফ জানাচ্ছেন, যে সমস্ত গাছগুলিকে সামান্য পরিচর্যা করলেই বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব সেগুলি কোনও ভাবেই কেটে ফেলা হবে না। এমনিতেই আমপানের কারণে সবুজের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে গিয়েছে। সেখানে অল্প ক্ষতিগ্রস্ত গাছও কেটে ফেলা হলে তাতে শহরের সবুজায়ন প্রকল্প ধাক্কা খাবে বলে মনে করছেন পুর কর্তৃপক্ষ। বন দফতরকেও সেটা জানানো হয়েছে।
কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য দেবাশিস কুমার বলেন, “আপাতত এলাকার কোনও বাসিন্দা গাছ কাটার ব্যাপারে খবর দিলে পুরকর্মীরা গিয়ে দেখবেন যে, ওই গাছ কী অবস্থায় রয়েছে। তার পরেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আপাতত পুর এলাকার সমস্ত জায়গা থেকে ঝড়ে পড়ে যাওয়া গাছ সরানোর উপরেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তবে কোনও গাছ বিপজ্জনক অবস্থায় থাকলে সে ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
উদ্যান দফতরের আধিকারিকেরা ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, গাছ কাটার আবেদন করে ফোন আসার পরে তাঁরা সেখানে গিয়ে দেখেছেন, গাছগুলি সে ভাবে মাটি থেকে আলগা হয়ে যায়নি। ফলে ভবিষ্যতে ঝড়ে ওই গাছগুলির উপড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও নেই। তার পরেও আশ্বস্ত হচ্ছেন না অনেকেই। অভিযোগ, বাড়ি সংলগ্ন গাছ ছাড়াও পাড়ায় ফাঁকা জায়গার বহু অক্ষত গাছ কেটে ফেলার জন্যেও পুরসভায় ফোন করছেন অনেকে। সে ক্ষেত্রে কেন সেগুলি কাটা হবে না, তার কারণও জানানো হচ্ছে তাঁদের। কিন্তু অভিযোগ, তার পরেও বারবার একই অনুরোধ আসছে পুরসভায়।