কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ। ফাইল চিত্র।
করোনা যুদ্ধে নামার আগে অধ্যাপক-চিকিৎসক-জুনিয়র চিকিৎসকদের নিয়ে বৃহস্পতিবার বৈঠক করলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যেই ঐতিহ্যবাহী ওই মেডিক্যাল কলেজের একাধিক চিকিৎসক, পিজিটি ও ইন্টার্ন-সহ বেশ কয়েক জন স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, করোনার সঙ্গে লড়াইয়ে এই বিষয়টি যাতে প্রভাব না ফেলে, সেই লক্ষ্যেই এ দিনের বৈঠক ডাকা হয়েছিল।
ওই বৈঠকে স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য, অধ্যক্ষা মঞ্জুশ্রী রায়, রোগী-কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের মন্ত্রী নির্মল মাজি ছাড়াও ছিলেন রাজ্যের করোনা বিশেষজ্ঞ কমিটির অন্যতম সদস্য-চিকিৎসক বিভূতি সাহা এবং সংক্রামক রোগের চিকিৎসক যোগীরাজ রায়। করোনা নিয়ে ভয় পাওয়ার যে কারণ নেই, তা নিজেদের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে তুলে ধরেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। তাঁদের বক্তব্য ছিল, এর আগে যখন চিকিৎসকেরা আক্রান্ত হয়েছেন, তখন পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন। সাধারণ রোগীদের কে ভাইরাসের উপসর্গহীন বাহক, তা বোঝা মুশকিল। কিন্তু কোভিড রোগীর চিকিৎসায় যে হেতু সব সময়েই রক্ষাকবচ পরতে হবে, তাই সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা কম। এই কারণেই অন্য হাসপাতালগুলির তুলনায় বেলেঘাটা আইডি বা এম আর বাঙুরের চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীরা বড় সংখ্যায় আক্রান্ত হননি বলে মত স্বাস্থ্য আধিকারিকদের।
স্বাস্থ্য দফতরের খবর, সারি (সিভিয়র অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইলনেস) রোগীদের সুস্থ করে তোলার প্রশ্নে রাজ্যের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য নয়। কো-মর্বিডিটির রোগীদের ক্ষেত্রেও সুস্থতার হার একই রকম। এই দুই সমস্যার মোকাবিলায় মেডিক্যাল কলেজের অধ্যাপক-চিকিৎসকদের অভিজ্ঞতার উপরে আস্থা রাখছে স্বাস্থ্য ভবন।
আরও পড়ুন: গণ্ডির বাইরের সংক্রমণ নিয়েই বেশি চিন্তা
‘নরম’ পুলিশ, তাই কি অবাধে বিধিভঙ্গ
৫০০ শয্যার কোভিড হাসপাতালকে যে ভাবে ভাগ করা হয়েছে, তাতেও সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার চেষ্টাই প্রতিফলিত হয়েছে। নির্মল জানান, সুপার স্পেশ্যালিটি বিল্ডিংয়ে কোভিড রোগীদের জন্য ২০০ শয্যার পাশাপাশি ২৬টি সিসিইউ থাকবে। গ্রিন বিল্ডিংয়ে ১৫০ শয্যার সারি ব্লকে থাকছে ১৮টি সিসিইউ। সম্প্রতি একাধিক প্রসূতির সন্তান প্রসবের আগে করোনা ধরা পড়েছে। যার প্রেক্ষিতে ইডেন বিল্ডিংয়ে প্রসূতিদের জন্য ১০০ শয্যার ওয়ার্ডেও পাঁচটি সিসিইউ থাকছে। এসএনসিইউ-এনআইসিইউ-র কথা মাথায় রেখে এমসিএইচ বিল্ডিংয়ে থাকছে ৫০টি শয্যা এবং ১০টি সিসিইউ।
নির্মল বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মেডিক্যাল কলেজকে ‘স্পেশ্যালাইজ়ড টেরিটরি’ কোভিড হাসপাতাল করার কথা বলেছেন। এই সম্মান রক্ষায় আমরা বদ্ধপরিকর।’’ মেডিক্যালের এক প্রশাসক-চিকিৎসক বলেন, ‘‘সর্বতোভাবে চেষ্টা করছি যাতে সফল হই। তবে সবটা যে হাতে নেই, তা স্বাস্থ্য ভবনকে জানিয়েছি।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)