কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
চিকিৎসক প্রজ্ঞাদীপা হালদারের রহস্য-মৃত্যু মামলায় নিম্ন আদালতের বিচার প্রক্রিয়া আপাতত স্থগিত করে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। সোমবার বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের নির্দেশ, নিম্ন আদালতের বিচার প্রক্রিয়া স্থগিত থাকার সময়ে সিআইডিকে অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দিতে হবে। আগামী ১৭ অক্টোবর মামলার পরবর্তী শুনানি। প্রসঙ্গত, ব্যারাকপুরে সেনা ছাউনির মধ্যে সেনাবাহিনীরই চিকিৎসক কৌশিক সর্বাধিকারীর বাড়িতে প্রজ্ঞাদীপার ঝুলন্ত দেহ মিলেছিল। প্রথমে ব্যারাকপুর পুলিশ তদন্ত করলেও মৃতার মা নিরপেক্ষ তদন্তের আর্জি জানিয়ে মামলা করেছিলেন। সেই মামলায় তদন্তভার সিআইডিকে দেয় কলকাতা হাই কোর্ট।
এই মামলায় সিআইডি অতিরিক্ত চার্জশিট দেবে বলে হাই কোর্টে সময় নিয়েছে। অথচ, নিম্ন আদালতে অতিরিক্ত চার্জশিট দেওয়ার কথা জানায়নি তারা। নতুন ভাবে তদন্ত করা সত্ত্বেও নিম্ন আদালতে অতিরিক্ত চার্জশিট দেওয়ার কথা না-জানানো বিস্ময়কর বলেই মনে করছেন আইনজীবীদের অনেকে। এ দিন বিচারপতি সেনগুপ্তও বলেন, "এটা কি ছেলেখেলা হচ্ছে? এক দিকে আরও তদন্ত করার কথা বলে হাই কোর্টে সময় নিচ্ছে, অন্য দিকে নিম্ন আদালতে চার্জ গঠন হচ্ছে!’’ তার পরেই চার্জ গঠন-সহ নিম্ন আদালতের বিচার প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়।
সূত্রের খবর, হাই কোর্টের সিআইডি তদন্তের নির্দেশ নিম্ন আদালতে জানানো হয়নি। তার ফলে সেখানে চার্জশিট জমা পড়েছে এবং তার প্রতিলিপি অভিযুক্তকে দেওয়া হয়ে গিয়েছে। যা আইনি ভাবে মোটেই ঠিক হয়নি বলে মনে করছেন আইনজীবী এবং পুলিশের অনেকে। এ দিন মামলাকারীর আইনজীবী লিটন মৈত্র বলেন, ‘‘হাই কোর্টের নির্দেশে এখন তদন্ত চলছে। এই অবস্থায় তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত চার্জ গঠন হওয়া সম্ভব নয়। তদন্ত রিপোর্ট দেখে তার পরেই চার্জ গঠন করা উচিত।’’
গত জুন মাসে কৌশিকের কোয়ার্টার্স থেকে প্রজ্ঞাদীপার দেহ উদ্ধার হয়েছিল। প্রথম থেকেই এই ঘটনায় আত্মহত্যার তত্ত্ব খাড়া করেছিল ব্যারাকপুর পুলিশ। মামলাকারীর পরিবারের অবশ্য দাবি ছিল, প্রজ্ঞাদীপা আত্মহত্যা করেননি। পরবর্তী কালে কৌশিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে পুলিশি তদন্তে গাফিলতির কথা হাই কোর্টের মামলায় উঠে এসেছিল। প্রজ্ঞাদীপার শরীরে থাকা একাধিক আঘাতের উল্লেখ কেন ময়না তদন্তের রিপোর্টে নেই, সেই প্রশ্ন যেমন উঠেছিল, তেমনই ময়না তদন্তকারী চিকিৎসকের ভূমিকা নিয়েও অনেকের মনে প্রশ্ন জেগেছিল।