এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরের গোড়ায় কলকাতা পুরসভা শহরের সব হুক্কা বার বন্ধ করার কথা জানিয়েছিল। প্রতীকী চিত্র।
হুক্কা বার বন্ধ নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার একক বেঞ্চের রায়ই বহাল রাখল ডিভিশন বেঞ্চ। আপাতত বন্ধ হচ্ছে না কলকাতা শহরের কোনও বার। বুধবার প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের নির্দেশ, আগামী ৩ সপ্তাহের মধ্যে কলকাতা পুরসভাকে পেপারবুক জমা দিতে হবে। ৬ সপ্তাহ পর আবার মামলাটির শুনানি জন্য হবে।
মঙ্গলবার হুক্কা বার বন্ধ নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের একক বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করে কলকাতা পুরসভা। আর্জিতে বলা হয়, শহরের সমস্ত হুক্কা বার বন্ধের নির্দেশ দিক আদালত। তবে বুধবার এই শুনানিতে হুক্কা বার মালিক পক্ষের আইনজীবী মেঘলা দাস যুক্তি দেন এমন কোনও আইন নেই, যার বলে ওই বারগুলি বন্ধ করা যাবে। টানা সওয়াল-জবাবের পর একক বেঞ্চের নির্দেশই বহাল রাখে আদালত।
২০০৩ সালে ‘সেন্ট্রাল টোব্যাকো আইন’ মেনে হুক্কা বারগুলি চালানো হয়। এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টেরও বেশ কয়েকটি রায় রয়েছে। সে রায়গুলি অগ্রাহ্য করে পুরসভা কী ভাবে হুক্কা বার বন্ধের সিদ্ধান্ত নিতে পারে, সে নিয়ে আগেই প্রশ্ন তুলেছেন হুক্কা বারের মালিকরা। তাঁদের দাবি, হুক্কায় ভেষজ তামাক ব্যবহার করা হচ্ছে। তাই পুরসভা সিদ্ধান্ত বদল না করলে হাজারের বেশি রেস্তরাঁর ব্যবসা ধাক্কা খাবে। তা ছাড়া, কিসের ভিত্তিতে হুক্কা বার বন্ধ করতে চায় পুরসভা তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা।
এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরের গোড়ায় কলকাতা পুরসভা শহরের সব হুক্কা বার বন্ধ করার কথা জানিয়েছিল। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম নিজে জানিয়েছিলেন, শহরের সব রেস্তরাঁ কর্তৃপক্ষকেই হুক্কা বার বন্ধ করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। অনুরোধে কাজ না হলে অথবা, গোপনে হুক্কা বার চালানো হলে পুলিশ উপযুক্ত পদক্ষেপ করবে। নিয়ম অমান্য করলে রেস্তরাঁগুলির লাইসেন্স নবীকরণ করা হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন মেয়র। সেই মতো পুলিশ পদক্ষেপও শুরু করে। তার পর বিধাননগর পুরসভার চেয়ারম্যান সব্যসাচী দত্তও হুক্কা বার বন্ধের জন্য পুলিশ কমিশনারেটকে চিঠি দিয়ে সক্রিয় হওয়ার আবেদন করেন। পুরসভা এবং পুলিশের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন হুক্কা বারের কয়েক জন মালিক। তাঁদের বক্তব্য, পুরসভার আইনে হুক্কা বার বন্ধের বিষয়ে বলা নেই। গত ২৪ জানুয়ারি কলকাতা হাই কোর্ট ওই মামলার শুনানিতে জানায় যে, কলকাতা এবং বিধাননগর এলাকায় কোনও হুক্কা বার বন্ধ করা যাবে না। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা ওই নির্দেশে জানান, যে হেতু এই বিষয়ে রাজ্যের কোনও আইন নেই, তাই মহানগর এবং উপনগরী এলাকায় হুক্কা বার চলতে পারে। কারণ কেন্দ্রীয় আইনেই সেই সুবিধা দেওয়া আছে। এর পরও যদি হুক্কা বার বন্ধ করতে হয়, তবে রাজ্য বা পুরসভাকে নতুন আইন প্রণয়ন করে তা বন্ধ করতে হবে। তার আগে পর্যন্ত হুক্কা বারগুলির বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করতে পারবে না।