ছবি: সংগৃহীত।
প্রবীণ আইনজীবীকে অপহরণ করে পরিবারের কাছ থেকে ১৬ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ চেয়েছিল দুষ্কৃতীরা। তদন্তে গতি আনতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল ওই আইনজীবীর পরিবার। কিন্তু তার পরেও আইনজীবীকে উদ্ধার করা যায়নি। বারুইপুর থানার তদন্ত নিয়ে সন্দিহান মামলাকারী পরিবারের আইনজীবী। এই পরিস্থিতিতে বারুইপুর থানা তদন্ত করতে পারবে কি না এবং তদন্তের বিস্তারিত রিপোর্ট ৪ জানুয়ারি পুলিশকে জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
গত ২১ ডিসেম্বর বারুইপুর আদালত থেকে বেরিয়ে আর বাড়ি ফেরেননি আইনজীবী ক্ষীরোদগোপাল সরকার (৭৫)। নির্ধারিত সময় পার হয়ে যাওয়ায় স্ত্রী ফোন করলে আইনজীবীর ফোন ধরে অপরিচিত এক ব্যক্তি তাঁকে বলে, ‘সময় মতো দাদু পৌঁছে যাবেন’। রাত হয়ে যাওয়ায় আইনজীবীর মোবাইলে আবার ফোন করলে সেটি বন্ধ পান পরিবারের লোকেরা। আইনজীবীর জামাই ফের ফোন করলে অপর প্রান্ত থেকে তাঁকে জানানো হয়, আইনজীবীর ছেলে যেন ফোন করেন। সেই মতো ক্ষীরোদবাবুর ছেলে বাসুদেব সরকার ফোন করলে দুষ্কৃতীরা তাঁকে জানায়, ১৬ লক্ষ টাকা পেলে তবেই আইনজীবীকে মুক্তি দেওয়া হবে।
পরদিন বারুইপুর থানায় ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৬৪এ ধারায় অভিযোগ (বারুইপুর পি এস কেস নম্বর ২৪৯২) দায়ের করেন বাসুদেববাবু। ২৩ ডিসেম্বর তিনি চিঠি দেন বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপারকে। তার পরে হাইকোর্টে হেবিয়াস কর্পাস দাখিল করে আইনজীবীর পরিবার। বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য এবং কৌশিক চন্দ্রের এজলাসে মামলাকারী পরিবারের আইনজীবী জানান, বারুইপুর থানা এই ঘটনার তদন্ত কতটা করতে পারবে তা নিয়ে তিনি সন্দিহান। যদিও সরকার পক্ষের কৌঁসুলি রানা মুখোপাধ্যায় আদালতকে জানান, বারুইপুরের পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং পুলিশের অন্য অফিসারদের নিয়ে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠিত হয়েছে। সিআইডি-র সহযোগিতাও চেয়েছে জেলা পুলিশ। আইনজীবীর ফোনের অবস্থান এবং কল ডিটেলস টেলিফোন পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার থেকে চাওয়া হয়েছে।
পুলিশ মহলের ব্যাখ্যা, দুষ্কৃতীরা অপহৃতের ফোন ব্যবহার করছে। ফলে সংশ্লিষ্ট ফোনের তথ্য পাওয়া গেলে আরও স্পষ্ট হবে। বারুইপুর থানা তদন্ত করতে পারবে কি না ও তার সঙ্গেই বিস্তারিত রিপোর্ট ৪ জানুয়ারি জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। ৩ জানুয়ারির মধ্যে রিপোর্টের প্রতিলিপি মামলাকারী পরিবারের আইনজীবীকেও দিতে হবে।