—প্রতীকী চিত্র।
ভুয়ো নকশা দিয়ে কী ভাবে সল্টলেকে পাঁচতলা বাড়ি তৈরি হয়েছিল, তা নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। মঙ্গলবার বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, কমপক্ষে উপ-নগরপাল পদের কোনও অফিসারকে যেন তদন্তভার দেওয়া হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে বিধাননগরের নগরপালকে। তদন্তকারী অফিসারের ভূমিকা নিয়েও উষ্মা প্রকাশ করেছে আদালত। প্রসঙ্গত, আগে সংশ্লিষ্ট নির্মাণটি ভাঙার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অমৃতা সিংহ। তার বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আর্জি জানিয়েছিলেন বহুতলটির প্রোমোটার। এ দিন সেই আর্জি খারিজ করে প্রোমোটারকে এক লক্ষ টাকা জরিমান করেছে হাই কোর্ট।
বিধাননগর পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে ওই বেআইনি বহুতলের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন স্থানীয় এক ব্যক্তি। তাঁর আইনজীবী বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায় ও শালিনী ঘোষ জানান, আইনি অনুমোদন ছাড়াই বাড়িটি তৈরি হয়েছিল। সেটি ভেঙে পড়ে মারাত্মক বিপদ ঘটতে পারত। তার পরেই বিচারপতি অমৃতা সিংহ বাড়িটি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন।
আদালতের খবর, ডিভিশন বেঞ্চে প্রোমোটার-পক্ষ দাবি করেছিল, তাদের নকশা আছে। সেই নকশা জমা দেয় তারা। কিন্তু পুর কর্তৃপক্ষ নথি পেশ করে জানান, ওই নকশার কোনও তথ্য পুরসভা থেকে দেওয়া হয়নি। নকশাটিকে কার্যত ভুয়ো বলে চিহ্নিত করেন তাঁরা। প্রসঙ্গত, ওই বহুতলের দুই প্রোমোটারের বিরুদ্ধে পুরসভা বিধাননগর পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছিল। আদালতে জানা গিয়েছে, তদন্তকারী অফিসার কোনও নথি বাজেয়াপ্ত করেননি। অভিযুক্ত দু’জনও সহজে জামিন পেয়েছেন।
এ দিন ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, বিধাননগর পুলিশ হাই কোর্ট প্রশাসনের কাছে জমা থাকা নকশার নথি নিতে পারবে ও অভিযুক্তেরা সহযোগিতা না করলে তাঁদের জামিন বাতিলে পদক্ষেপ করতে পারবে।
এ দিনের নির্দেশের পরে বেআইনি নির্মাণের সঙ্গে পুলিশ-প্রশাসনের একাংশের যুক্ত থাকা এবং দুই প্রোমোটারের সঙ্গে স্থানীয় পুরপ্রতিনিধির ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ ফের উঠেছে। সংশ্লিষ্ট পুরপ্রতিনিধি আশুতোষ নন্দীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলে তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ নিয়ে এখনও কিছু জানি না। পুরসভা সব সময়ে বেআইনি নির্মাণের বিরোধী।’’