ট্রাম রক্ষা করার ব্যাপারে রাজ্যকে নতুন কমিটি তৈরি করতে বলেছে আদালত। —ফাইল চিত্র।
কলকাতা ট্রামওয়েজ়ের জমি এবং সম্পত্তি বিক্রির উপরে স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। প্রধান বিচারপতি টি এস শিবগণনম এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, আদালতের অনুমতি ছাড়া জমি বা সম্পত্তি বিক্রি করা যাবে না। শহরে একের পর এক ট্রাম ডিপো বন্ধ হওয়ার ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান বিচারপতি। ট্রাম রক্ষা করার ব্যাপারে রাজ্যকে নতুন কমিটি তৈরি করতে বলেছে আদালত। ট্রামের সম্পত্তি বিক্রি করা নিয়ে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন সুলগ্না মুখোপাধ্যায় নামে এক মহিলা। সেই মামলাতেই এ দিন এই নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট।
প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, হেরিটেজ রক্ষার দায় সরকারের। দুর্গাপুজো হেরিটেজ তকমা পাওয়ায় মানুষ যেমন গর্বিত, তেমনই ট্রাম রক্ষা করলেও তাঁরা গর্বিত হবেন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘ইট, কাঠ, লোহা দিয়ে বহুতল বানানো যেতেই পারে। কিন্তু তাতে লাভ কী?’’ মামলাকারীর অভিযোগ, ট্রাম রুট ১১৬ কিলোমিটার থেকে কমে ৩৩ কিলোমিটার হয়ে গিয়েছে। বেলগাছিয়া-সহ বিভিন্ন ট্রাম ডিপোর জমি বিক্রি করা হয়েছে। ট্রাম যে বাঙালির আবেগের সঙ্গে জড়িত, তা-ও আদালতে তুলে ধরেন তাঁর আইনজীবী। স্বাধীনতার পরে ট্রামে চেপে মানুষের উচ্ছ্বাসের ছবির কথাও জানান তিনি।
এ দিন কোর্টে বাতানুকূল ট্রামের প্রসঙ্গও উঠেছে। কোর্টের পর্যবেক্ষণ, বাতানুকূল ট্রামের সংখ্যা বাড়ানো যেতে পারে। বাড়ানো যেতে পারে ভাড়াও। আরও বেশি করে পর্যটকদের আকর্ষণ করা যেতে পারে। তিন সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যকে ওই বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্যদের নাম জানাতে বলেছে আদালত।
মাসখানেক আগে অন্য এক সংস্থার পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলায় ট্রামের ট্র্যাক পিচ দিয়ে ঢেকে ফেলার কাজ বন্ধের নির্দেশ জারি হয়েছিল। ‘কলকাতা ট্রাম ইউজ়ার্স অ্যাসোসিয়েশন’ এ দিনের রায়কে স্বাগত জানিয়েছে।