আরজি করে সেমিনার হল সুরক্ষিত কি না, দেখবে সিবিআই। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আরজি কর হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনায় সেমিনার হল সুরক্ষিত রয়েছে, কলকাতা হাই কোর্টে বার বার সেই দাবি করেছে রাজ্য সরকার। সত্যিই তা সুরক্ষিত কি না, কোনও প্রমাণ লোপাট হয়ে গিয়েছে কি না, সিবিআইকে এ বার তা দেখে আসতে বলল আদালত। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। আদালত জানিয়েছে, তদন্তের স্বার্থে যে কোনও দিন, যে কোনও সময়ে আরজি করের জরুরি বিভাগের চার তলায় সেমিনার হল ঘুরে দেখে আসতে পারেন সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা। সেখানেই মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার রাতে ধর্ষণ-খুনের ঘটনার প্রতিবাদে আরজি করে যে আন্দোলন চলছিল, তার মাঝেই এক দল দুষ্কৃতী হাসপাতালে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। ভাঙচুর করা হয় জরুরি বিভাগে। তবে প্রথম থেকেই পুলিশ দাবি করেছে, হাসপাতালের ইএনটি বিভাগে হামলা চালানো হয়েছে। চার তলায় পৌঁছতে পারেননি হামলাকারীরা। ঘটনাস্থল সুরক্ষিত রয়েছে। এই হামলার পর অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন, প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করতেই কি জরুরি বিভাগকে ‘টার্গেট’ করা হয়েছিল? আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে কেন সেখানেই হামলা চালানো হল? এ নিয়ে শুক্রবার হাই কোর্টে নতুন করে একটি মামলা হয়। সেই সংক্রান্ত শুনানিতে হাসপাতালে আরও এক ভাঙচুরের ঘটনার প্রসঙ্গ উঠে আসে।
গত মঙ্গলবার আরজি কর-কাণ্ডের তদন্তভার সিবিআইকে দিয়েছিল আদালত। অভিযোগ, তার পরেই চার তলায় সেমিনার হলের অদূরে একটি ঘর ভাঙার কাজ শুরু হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য ছিল, চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে ঘর সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছিল। চিকিৎসকদের বিশ্রামের ঘর সংস্কারের মাধ্যমে বড় করা হচ্ছিল। সেই কাজ অবশ্য বন্ধ করে দেওয়া হয় মাঝপথে। সে প্রসঙ্গে আদালত শুক্রবার রাজ্যের আইনজীবীকে প্রশ্ন করেছেন, ‘‘এখনই কেন ঘরটি ভাঙতে হল? এত তাড়াহুড়ো কিসের?’’
এই দুই ভাঙচুরের ঘটনার পর ঘটনাস্থল সুরক্ষিত রয়েছে কি না, সিবিআইকে তা দেখে আসার স্বাধীনতা দিল হাই কোর্ট। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের বেঞ্চ জানায়, সিবিআই চাইলে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে পারে। তদন্ত সংক্রান্ত রিপোর্ট তারা আদালতে জমা দেবে মামলার পরবর্তী শুনানির দিন। বুধবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। এ ছাড়া, আদালত এ বিষয়ে রাজ্যের কাছেও হলফনামা চেয়েছে। ঘটনাস্থল সুরক্ষিত রয়েছে বলে রাজ্য যে বার বার দাবি করছে, তা হলফনামা আকারে জানাতে হবে আদালতকে। সঙ্গে এ-ও জানাতে হবে, আগামী দিনে এমন ঘটনা ঘটলে কী ভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলা করবে পুলিশ? বুধবার রাতের ঘটনাতেও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে আদালত।