মঙ্গলবারও বিচারপতি মান্থার এজলাস বয়কটের ঘটনায় প্রধান বিচারপতির কাছে দুঃখপ্রকাশ করে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল জানিয়েছিলেন, তিনি লজ্জিত। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার কাছে দুঃখপ্রকাশ করল রাজ্য। সোমবার থেকে বিচারপতির বিরুদ্ধে হাই কোর্ট চত্বরে যে ভাবে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে, তা নিয়ে এর আগে প্রধান বিচারপতির কাছেও দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। তবে বুধবার সরাসরি বিচারপতি মান্থাকেই তিনি বলেছেন, ‘‘যা হয়েছে তা খুবই দুঃখজনক ঘটনা।’’
বুধবার একটি মামলার শুনানি চলাকালীন বিচারপতি মান্থার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন এজি। বিচারপতিই প্রথম এই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন।সৌমেন্দ্রনাথের কাছে জানতে চান, ‘‘অধিকাংশ মামলায় রাজ্যের অনেক আইনজীবী উপস্থিত থাকছেন না। কেন এমন হচ্ছে? রাজ্যের আইনজীবীরা আসছেন না কেন?’’ এর জবাবেই রাজ্যের এজি বলেন, ‘‘এই ঘটনায় আমি দুঃখিত। খুব দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। এখনও কেন এটা হচ্ছে খোঁজ নিয়ে দেখছি। কথা বলছি ওই আইনজীবীদের সঙ্গে।’’
বিচারপতি মান্থার বিরুদ্ধে সোমবার থেকেই বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন হাই কোর্টের আইনজীবীদের একাংশ। মঙ্গলবার তাঁরা বিচারপতির এজলাস বয়কটের ডাকও দেন। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার হাই কোর্টে বিচারপতি মান্থা আদালত অবমাননার রুল জারি করলেও সেই বয়কট ওঠেনি। বুধবার সকালে আইনজীবীরা অবস্থান বিক্ষোভ তুলে নিলেও জানিয়ে দেন বয়কট চালু থাকবে। এই আবহেই রাজ্যের তরফে এজি দুঃখপ্রকাশ করলেন বিচারপতি মান্থার কাছে। প্রতিশ্রুতি দিলেন আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলার।
পাল্টা বিচারপতি মান্থা তাঁকে বলেছেন, ‘‘বিচারপ্রার্থীদের কথা ভাবতে হবে রাজ্যের আইনজীবীদের। আইনজীবীরা না আসায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি স্থগিত করতে বাধ্য হচ্ছি। অনেক মামলায় কিছু নির্দেশও দিতে পারিনি। দেখা যাক বৃহস্পতিবার কী হয়!’’
উল্লেখ্য, বিচারপতি মান্থার এজলাস বয়কটের ঘটনায় প্রধান বিচারপতি শ্রীপ্রকাশ শ্রীবাস্তব কাছে মঙ্গলবারই দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল। তিনি বলেছিলেন, ‘‘যা ঘটেছে তাতে আমি লজ্জিত। এটা দুঃখজনক।’’ জবাবে প্রধান বিচারপতি পাল্টা বলেছিলেন, ‘‘এই বিষয়ে আগেই সংগঠিত সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল।’’
প্রসঙ্গত, তাঁর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়ে আইনজীবীদের একাংশ বিচারপ্রক্রিয়ায় বাধা দিচ্ছেন জানিয়েই আদালত অবমাননার রুল জারি করেছিলেন বিচারপতি মান্থা। কারণ, এই মুহূর্তে বিচারপতি মান্থার বিচারাধীন রাজ্যের বেশ কয়েকটি মামলা। তার অনেকগুলি বেশ গুরুত্বপূর্ণও।