এই অ্যাপ ক্যাবেই ঘটনাটি ঘটে। নিজস্ব চিত্র।
অ্যাপ-ক্যাবের ভিতরেই দুই তরুণীর যৌন হেনস্থা করার অভিযোগ উঠল চালকের বিরুদ্ধে। ঘটনার সময়ে চালক তাঁদের মুখে কিছু স্প্রে করেন বলেও দাবি অভিযোগকারিণীদের। তাঁদের চিৎকারে লোক জড়ো হলে দুই তরুণীকে নামিয়ে তাঁদের ব্যাগ নিয়েই চালক পালান বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার এই ঘটনায় যৌন-হেনস্থা এবং চুরির ধারায় মামলা রুজু হয়। তদন্তে নেমে দু’ঘণ্টার মধ্যেই ক্যাব-চালককে গ্রেফতার করে রবীন্দ্র সরোবর থানার পুলিশ। স্বপন বিশ্বাস নামে বছর চল্লিশের ওই চালকের বাড়ি হরিদেবপুর থানা এলাকার কবরডাঙায়। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতকে জেরা করে চারু মার্কেট থানা এলাকার ছোট রাজবাড়ি মাঠ থেকে দুই তরুণীর ব্যাগ উদ্ধার হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, বছর উনিশের এক তরুণী মঙ্গলবার রাত ন’টা নাগাদ রবীন্দ্র সরোবর থানায় গিয়ে জানান, রাত সওয়া আটটা নাগাদ মহানির্বাণ রোডের একটি কাফে থেকে হরিদেবপুরে বাড়ি ফেরার জন্য অ্যাপ-ক্যাব বুক করেন তাঁর এক বন্ধু। ক্যাবে ছিলেন তাঁরা দু’জন। ওই তরুণীর দাবি, ‘‘ওই পথেই আমার বান্ধবীর বাড়ি। তাই ওকে নামিয়ে দেওয়ার কথা ক্যাব-চালককে বলি। তখনই তিনি চিৎকার শুরু করেন। সে ক্ষেত্রে নতুন করে লোকেশন যোগ করতে হবে বলে জানান তিনি। আমি যুক্তি দিই, আমার বাড়ি যাওয়ার পথেই তো পড়বে ওই রাস্তা। তা হলে কেন লোকেশন যোগ করব?’’
এই নিয়েই শুরু হয় বচসা। সেই সময়ই চালক দুই বন্ধুর মুখে কিছু স্প্রে করেন বলে অভিযোগ। গাড়ি থামাতে বলা হলে চালক জোরে গাড়ি ছোটাতে শুরু করেন বলে দাবি এক তরুণীর। তাঁর অভিযোগ, ‘‘এক সময়ে আমি ও আমার বন্ধু জানলা দিয়ে মুখ বার করে চিৎকার করতে শুরু করি। তবু না থামানোয় আমরা দরজা খোলার চেষ্টা করছি দেখে যতীন বাগচী রোড এবং সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ের সংযোগস্থলের কাছে গাড়ি থামান চালক। লোকজন ছুটে এলে ক্ষমা চাওয়ার ভান করে ওই চালক আমার গায়ে হাত দেন।’’ তখন লোকজন তেড়ে গেলে দুই তরুণীর ব্যাগ নিয়ে চালক দ্রুত গাড়ি নিয়ে পালান বলে দাবি।
তদন্তে নেমে পুলিশ সংশ্লিষ্ট অ্যাপ-ক্যাব সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে। সেই সূত্রেই চালকের তথ্য পাওয়া যায়। এর পরে রেজিস্ট্রেশন নম্বর ধরে গাড়ির মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশ। সেই সূত্রে পাওয়া ঠিকানায় পুলিশের একটি দল রাতেই হানা দেয়। সেখান থেকেই গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তকে। জেরায় ধৃত জানান, লকডাউনে সে ভাবে আয় না হওয়ায় লোকেশন যোগ করতে বলেছিলেন তিনি। চালকের দাবি, রাগের মাথায় তিনি দুই তরুণীর মুখে স্যানিটাইজ়ার স্প্রে করে দিয়েছিলেন। সমস্ত দাবিই অবশ্য খতিয়ে দেখছে পুলিশ।