প্রতীকী ছবি
১২ সেপ্টেম্বর থেকে চিনের শেনঝেন শহরের মর্গে পড়ে রয়েছে কলকাতার এক ব্যবসায়ীর দেহ। দেহ আনার জন্য বড় অঙ্কের যে খরচ লাগবে, তা দিতে অপারগ বেনিয়াপুকুরের লিন্টন স্ট্রিটের বাসিন্দা ইমতিয়াজ আহমেদের পরিবার। তাদের দাবি, গুয়াংঝাউয়ের ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে দেহ দেশে পাঠানোর জন্য ১০ লক্ষ টাকা চাওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই ইমতিয়াজের চিকিৎসা বাবদ ২৫ লক্ষ টাকা হাসপাতালকে মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পরিবার। এখন টাকার অভাবে দেহ আটকে রয়েছে ব্যবসায়ীর।
পরিবার সূত্রের খবর, গত ২৫ বছর ধরে চিনে ব্যবসা করছিলেন বছর ছাপান্নের ইমতিয়াজ। মোবাইলের কোয়ালিটি কন্ট্রোল পরীক্ষা করা তাঁর সংস্থার কাজ। সেই সূত্রে হংকং, সাংহাই এবং শেনঝেনে থাকতেন ওই ব্যবসায়ী। বিবাহিত ওই ব্যবসায়ীর স্ত্রী-সহ পরিবার এ শহরেই থাকে। তাই প্রায়ই কলকাতায় আসতেন তিনি। পরিবার সূত্রের খবর, সম্প্রতি তাঁর ব্যবসায় বড় ক্ষতি হয়ে গিয়েছিল। তাই ১২ মার্চ কলকাতা থেকে শেনঝেনে ফেরেন ইমতিয়াজ। ‘বন্দে ভারতে’ আবেদন করে ওই ব্যবসায়ীর ভাই আরিফ, ২ সেপ্টেম্বর দাদার দেশে আসার ব্যবস্থাও করেছিলেন। ২৯ অগস্ট খবর আসে ইমতিয়াজ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর পর থেকে হাসপাতালেই ছিলেন তিনি। চিকিৎসা চলাকালীন ১২ সেপ্টেম্বর সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর শংসাপত্র ইমেল করে আরিফকে পাঠিয়েছে গুয়াংঝাওয়ের ভারতীয় দূতাবাস। দোভাষীর সাহায্য নিয়ে জানা গিয়েছে, চিনা ভাষার সেই শংসাপত্রে লেখা আছে, গ্যাস্ট্রাইটিসের কারণে পেটে কোনও ভাবে রক্তক্ষরণ হয়ে এই মৃত্যু।
আরিফের কথায়, “দাদার দেহ আনতে বার বার দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে চলেছি। কিন্তু আনার অনুমতি পেলেও ১০ লক্ষ টাকা দিতে বলা হচ্ছে। মৃত্যুর পরেই দেহ কবর দেওয়ার নিয়ম আমাদের। সেখানে ১৬ দিন পেরিয়ে দেহ টাকার অভাবে ভিন্ দেশের মর্গে পড়ে রয়েছে। পরিবারের সকলেই দুশ্চিন্তার মধ্যে কাটাচ্ছে।”
পরিবার সূত্রের খবর, ব্যবসায় ক্ষতি হওয়ায় ইমতিয়াজ মুষড়ে পড়েছিলেন। অবসাদেও ভুগছিলেন। তবে এতখানি অসুস্থ হয়ে আইসিইউ-এ ভেন্টিলেশনে কেন রাখা হয়েছিল, সে সব বিস্তারিত তথ্য অবশ্য জানেন না ইমতিয়াজের পরিজনেরা। তবে এই মুহূর্তে তাঁর দেহ কলকাতায় নিয়ে আসার জন্য মরিয়া পরিবার। কিন্তু সরকারি সাহায্য ছাড়া এত টাকা দিয়ে দেহ আনা তাদের পক্ষে সম্ভব নয় বলেই জানাচ্ছেন ওই পরিবারের সদস্যেরা।
সোমবার চিনের গুয়াংঝাওয়ের ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কেউ ফোন ধরেননি। এ বিষয়ে রাজ্য প্রশাসনের ভূমিকা জানতে স্বরাষ্ট্র দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কোনও উত্তর মেলেনি।