অঘটন: উল্টে গিয়েছে বাস। সোমবার, গোলাঘাটায়। ছবি: শৌভিক দে
রেষারেষি করতে গিয়ে বাস গর্তে পড়ে গেল ভিআইপি রোডের গোলাঘাটা এলাকায়। জখম চালক-সহ তিন জন। কারও চোটই অবশ্য গুরুতর নয়। বাসের জানলা ধরে ঝুলে পড়েও স্থানীয় লোকজন সেটিকে পড়ে যাওয়া থেকে ঠেকাতে পারেননি।
তবে সোমবারের ওই ঘটনার জেরে প্রবল যানজট তৈরি হয় ভিআইপি রোডের বিমানবন্দরমুখী রাস্তা-সহ সংলগ্ন এলাকায়। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এ দিন রাত সওয়া ৮টা নাগাদ ভিড়ে ঠাসা ৪৪ নম্বর রুটের একটি বাস গোলাঘাটা সার্ভিস রোড ধরে যাচ্ছিল বাগুইআটির দিকে। অন্য একটি বাসের সঙ্গে রেষারেষি করতে গিয়ে গোলাঘাটার নির্মীয়মাণ ভূগর্ভস্থ পথের কাছে চলে আসে সেটি। পুলিশের গার্ডরেল, টিনের ব্যারিকেড ও ইটের পাঁচিল ভেঙে এগিয়ে এসে ওই প্রকল্পের গর্তে ঝুলতে থাকে বাসটির প্রায় অর্ধেক অংশ। আতঙ্কে ভিতরে চিৎকার করতে থাকেন যাত্রীরা। দৃশ্য দেখে ছুটে আসেন স্থানীয় লোকজন। তাঁরাই পিছনের দরজা দিয়ে মহিলা ও শিশু-সহ প্রায় সকলকেই বার করে আনেন। বাসে রয়ে যান চালক ও কন্ডাক্টর-সহ তিন জন। পিছন দিকের যাত্রীরা বেরিয়ে আসতেই বাসটি সামনের দিকে আরও বেশি ঝুঁকে পড়ে। তখন বাইরে থাকা লোকজন বাসটিকে পড়ে যাওয়া থেকে আটকাতে জানলা ধরে ঝুলে পড়েন। কিন্তু বাসের ওজন তাঁরা বেশি ক্ষণ রাখতে পারেননি। কিছু ক্ষণ পরেই তাঁদের হাত ছাড়িয়ে বাসটি গর্তে পড়ে যায়। তবে সেই গর্তের গভীরতা খুব বেশি না হওয়ায় ভিতরে থাকা তিন জন খুব গুরুতর চোট পাননি। তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। ক্রেন এনে বাসটিকে তোলার ব্যবস্থা করা হয়।
জয়দেব ঘোষ নামে ওই প্রকল্পের এক কর্মী বলেন, ‘‘বাসটিকে ওই অবস্থায় দেখে আমরা ছুটে যাই। ঘটনাটি দেখতে ভিড় জমে যায়। তাতে উদ্ধারকাজে খুব অসুবিধা হচ্ছিল।’’
এই ঘটনার জেরে চতুর্দিকে তৈরি হয় যানজট। এক সময়ে গাড়ির লাইন চলে যায় প্রায় কাঁকুড়গাছি পর্যন্ত। দুর্ভোগে পড়েন অসংখ্য মানুষ। পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে ঘণ্টা দু’য়েক লেগে যায়। পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বাসটি রেষারেষি করছিল কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’ পুলিশকর্তা এ কথা বললেও পূর্ত দফতরের এক আধিকারিক কিন্তু মেনে নিয়েছেন রেষারেষির কথা। ওই প্রকল্পটি পূর্ত দফতরেরই অধীন।