bus service

রাত নামতেই উধাও বাস, রাস্তায় অসহায় নিত্যযাত্রীরা

সকালে অফিসের সময়টুকুই। তার পরেই ধীরে ধীরে শহরের রাস্তা থেকে উধাও হয়ে যেতে থাকে বাস।

Advertisement

চন্দন বিশ্বাস

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:৩৮
Share:

ভোগান্তি: সন্ধ্যার পরে বাড়ি ফেরার জন্য বাসের অপেক্ষা নিত্যযাত্রীদের। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

সকালে অফিসের সময়টুকুই। তার পরেই ধীরে ধীরে শহরের রাস্তা থেকে উধাও হয়ে যেতে থাকে বাস। সরকারি হোক কিংবা বেসরকারি— সম দোষের অভিযোগ উঠছে সবার বিরুদ্ধেই। বেসরকারি বাসমালিকদের দাবি, আনলক-পর্বে সর্বত্র কাজকর্ম পুরোদমে শুরু না হওয়ায় রাস্তায় যথেষ্ট সংখ্যক যাত্রী নামছেন না। তাই বাসও চলছে কম। যদিও রাজ্য পরিবহণ নিগমের দাবি, সব বাসই চলছে। তা হলে রাতের শহরের রাস্তায় দাঁড়িয়ে বাসের জন্য যাত্রীদের হা-পিত্যেশ করতে হচ্ছে কেন? তার জবাব মেলেনি।

Advertisement

যাত্রীদের অভিযোগ, রাতের শহরে বাসের অভাবে তাঁদের বেশি করে নির্ভর করতে হচ্ছে শেয়ারের গাড়ি, ট্যাক্সি, নয়তো অ্যাপ-ক্যাবের উপরে। যার জেরে রাতে বাড়ি ফেরার জন্য গাড়িভাড়া বাবদ অতিরিক্ত টাকা খরচ হচ্ছে।

রাতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে নাকাল হওয়া শহর ও শহরতলির যাত্রীদের অভিযোগ, রাত ন’টার পরে বাস পেতে ৩০-৪০ মিনিট অপেক্ষা করতে হচ্ছে। শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণ— সর্বত্রই এক চিত্র। নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, অফিসের সময়ে পর্যাপ্ত বাসের দেখা মিললেও রাত বাড়লেই ধীরে ধীরে বাস কমতে থাকে। রাত ৯টার পরে বাস কার্যত থাকেই না। অভিযোগ, নাইট-সার্ভিসের সরকারি বাসেরও দেখা মেলে না। রাসবিহারী, ধর্মতলা, শিয়ালদহ, রবীন্দ্র সদন— সর্বত্রই পরিস্থিতি এক।

Advertisement

বেসরকারি বাসমালিকদের যুক্তি, করোনার পরে আনলক-পর্বে অফিস, কল-কারখানা চালু হলেও এখনও অনেক সংস্থাই কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করাচ্ছে। তাই রাস্তায় যাত্রীর সংখ্যা কম। রাত ন’টার পরে সেই সংখ্যা আরও কমতে থাকে। পর্যাপ্ত যাত্রীর অভাবই বাসের সংখ্যা কমার কারণ বলে দাবি ওই সব বাসমালিকের।প্র

ধর্মতলায় বাসের অপেক্ষা নিত্যযাত্রীদের।

তিদিন রাত ন’টার পরে অফিস শেষ হয় দুর্গানগরের বাসিন্দা রিম্পা হোড়ের। কসবার কাছে একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী রিম্পা বলেন, ‘‘রাত ৯টার পরে রুবি থেকে উল্টোডাঙা স্টেশনের বাস পেতে কখনও ৩০-৪০ মিনিট অপেক্ষা করতে হয়। এই কারণে অনেক সময়ে ট্রেন ধরতে পারি না। তখন চরম ভোগান্তি হয়।’’

প্রায় দিনই এমন পরিস্থিতির শিকার হন সিঙ্গুরের বাসিন্দা বীথি দাস। তিনি বলেন, ‘‘রাত ৮টার পরে রাসবিহারী থেকে হাওড়া স্টেশন যাওয়ার বাস পেতে নাজেহাল হতে হয়। অনেক ক্ষণ অপেক্ষার পরে বাস পেলেও তাতে বাদুড়ঝোলা অবস্থা থাকে। অধিকাংশ দিনই শেয়ারের গাড়িতে যেতে হয়। সরকারের বিষয়টি দেখা উচিত।’’

সমস্যার কথা স্বীকার করে ‘অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যাত্রী-সংখ্যার অপ্রতুলতার কারণেই মূলত সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে বাস কমতে থাকে। রাত ৯টার পরে আরও বাস কমে যায়।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘রাতের দিকে যাত্রী প্রায় হয়ই না। তার উপরে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি বাসমালিকদের লোকসানের পরিমাণ দ্বিগুণ করেছে। তাই অনেক সময়ে রাতের দিকে বাস না চালিয়ে চালক- কন্ডাক্টরেরা বাড়ি ফিরে যান।’’ সমস্যা সমাধানে তিনি ভর্তুকির দাবি জানান।

অবশ্য রাজ্য পরিবহণ দফতরের এক শীর্ষ কর্তা রাতের শহরে বাস কমে যাওয়ার কথা মানতে চাননি। তিনি দাবি করেন, লকডাউনের আগে কলকাতা শহরে যত সংখ্যক সরকারি বাস চলত, বর্তমানেও ততগুলি সরকারি বাসই চালানো হচ্ছে।

তিনি যা-ই বলুন, তাঁর দাবি মানতে নারাজ বাসের অভাবে রাতে বাড়ি ফিরতে নাজেহাল যাত্রীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement