—ফাইল চিত্র
বেসরকারি বাস-মিনিবাসে উঠলেই দিতে হবে ন্যূনতম ১৪ টাকা। করোনা পরিস্থিতিতে লোকসানের বহর কমাতে রাজ্য সরকারের কাছে ভাড়া বৃদ্ধির এমনই দাবি জানাতে চলেছে বেসরকারি বাসমালিকদের ছ’টি সংগঠন। বুধবার শরৎ বসু রোডে ‘মিনিবাস অপারেটর্স কোঅর্ডিনেশন কমিটি’র কার্যালয়ে বৈঠকে বসেন ‘জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটস’, ‘বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেট’, ‘বাস-মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’, ‘বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতি’, ‘সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিস’ এবং ‘মিনিবাস অপারেটর্স কোঅর্ডিনেশন কমিটি’র নেতৃত্ব।
বাসমালিকদের অভিযোগ, ডিজ়েলের দাম গত কয়েক মাসে লিটার প্রতি ১০ টাকারও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি, বাসের বিমা ও রক্ষণাবেক্ষণ-সহ অন্যান্য খরচও বেড়েছে। এই অবস্থায় লোকাল ট্রেন এবং মেট্রো পরিষেবা চালু হলেও বাসে এখনও পর্যাপ্ত যাত্রী হচ্ছে না। অর্থাৎ, আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সমতা রক্ষা করতে গেলে যে সংখ্যক যাত্রী হওয়া দরকার, তা হচ্ছে না। তাই লোকসানের বহর দিনদিনই বাড়ছে। সেই কারণেই অধিকাংশ রুটে সব বাস একই দিনে রাস্তায় নামছে না। এই অবস্থায় ভাড়া বাড়ানোই একমাত্র সমাধান বলে মনে করছেন বাসমালিকেরা।
রাজ্য সরকারের পরিবহণ সংক্রান্ত বিশেষ কমিটির চেয়ারম্যান মদন মিত্র এ দিন বলেন, ‘‘বাসমালিকদের সমস্যা সম্পর্কে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে ১০ মাসে কিছুই জানাননি প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। এই সমস্যা ওঁর তৈরি করে যাওয়া। আমি কালই ওঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসব। নিশ্চয়ই সমাধানসূত্র বেরিয়ে আসবে। করজোড়ে ওঁদের বলব, একটু ধৈর্য ধরুন।’’
আরও পড়ুন: ফের বাড়ল আয়কর রিটার্নের সময়, ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত, জানাল অর্থ মন্ত্রক
আরও পড়ুন: সৌম্যেন্দুর অপরাধ কী? ‘ন্যায়বিচার’ চেয়ে মমতাকে চিঠি মধ্যম অধিকারীর
‘বাস-মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর যুগ্ম সম্পাদক প্রদীপনারায়ণ বসু এ দিন বলেন, ‘‘আমরা সব ক’টি সংগঠন মিলে পরিবহণ সচিবকে চিঠি দিয়ে আমাদের দাবির কথা জানাব। গঙ্গাসাগর মেলা পর্যন্ত অপেক্ষা করব। তত দিনে সাড়া না পেলে আন্দোলনে নামব। ভাড়া বৃদ্ধি ছাড়া আমাদের সামনে অন্য কোনও রাস্তা খোলা নেই।’’
এ দিনের বৈঠকে সশরীরে হাজির না থাকলেও ‘জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটস’-এর সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সরকারের ঘোষিত সুযোগ-সুবিধা কিছুই পাইনি। তাই পরিষেবা সচল রাখতে গেলে ভাড়া বৃদ্ধিই একমাত্র পথ।’’ ‘সিটি সাবার্বান সার্ভিস’-এর টিটু সাহার কথায়, ‘‘লোকসান করে বেশি দিন বাস রাস্তায় নামানো সম্ভব নয়। আয়-ব্যয়ে সামঞ্জস্য রেখে কী ভাবে বাস চালানো যায়, তা ভেবে দেখতে বলছি সরকারকে।’’
করোনা পরিস্থিতিতে বেসরকারি বাসের ভাড়া বাড়িয়ে মানুষের উপরে বাড়তি বোঝা চাপাতে না চাওয়ার কথা একাধিক বার জানিয়েছে রাজ্য সরকার। সেই কারণেই ভাড়া বাড়াতে কোনও মতেই রাজি হননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে বাসমালিকদের একাংশ বিভিন্ন রুটে বাড়তি ভাড়া আদায় করছেন বলে অভিযোগ। যার জেরে বেশ কিছু রুটে যাত্রীদের সঙ্গে বাসকর্মীদের সংঘাতের ঘটনাও ঘটেছে।
এমন পরিস্থিতি এড়াতেই বাসের ভাড়া বৃদ্ধির দাবি নিয়ে সরব হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেসরকারি বাসমালিকদের বিভিন্ন সংগঠন।