ফাইল ছবি
মাথায় ২৭১টি কেসের বোঝা নিয়েই শহরের রাস্তায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল সেটি! তবে কি অতিরিক্ত গতির পুরনো রোগের কারণেই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বাসটি? বেহালায় দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসটিকে ঘিরে এখন এই প্রশ্নই উঠতে শুরু করেছে। ঘটনার পরে মঙ্গলবার রাতে পলাতক বাসচালক সুপ্রিয় সরকারকে গ্রেফতার করেছে পর্ণশ্রী থানার পুলিশ। তবে এত কেস নিয়ে বাসটি আদৌ রাস্তায় নামল কী করে, সেই প্রশ্নই উঠছে বিভিন্ন মহলে।
মঙ্গলবার সকালে বেহালার বীরেন রায় রোডে উদ্দাম গতিতে স্কুলগাড়ি-সহ পর পর কয়েকটি গাড়িতে ধাক্কা মেরেছিল বেসরকারি বাসটি। সেই ঘটনায় আহত হন ছ’জন। তবে দুর্ঘটনার এক দিন পরেও কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। যান্ত্রিক কোনও গোলযোগ না কি দ্রুত গতি— ঠিক কী কারণে ওই দুর্ঘটনা, তা জানতে গাড়িটির মেকানিক্যাল পরীক্ষার তোড়জোড় শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পাশাপাশি, দুর্ঘটনার সময়ে বাসচালক মত্ত অবস্থায় ছিল কি না, তা-ও ধৃতকে জেরা করে খতিয়ে দেখা হবে।
এ দিকে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, দুর্ঘটনাগ্রস্ত ১২সি/১ রুটের ওই বাসটির বিরুদ্ধে পুলিশের খাতায় ট্র্যাফিক আইনভঙ্গে মোট ২৭১টি কেস ছিল। যার মধ্যে শুধু ৭৭টি কেস হয়েছে ‘সাইটেশনে’। সূত্রের খবর, ওই বাসটির বিরুদ্ধে অতিরিক্ত গতি, বিপজ্জনক ভাবে গাড়ি চালানো, সিগন্যাল না মানার মতো একাধিক কেসও রয়েছে। কেন বাসটির বিরুদ্ধে এত দিন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, এ বার সেই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। যদিও কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। যে সব গাড়ির বিরুদ্ধে ভূরি ভূরি কেস রয়েছে, তাদের চিহ্নিত করা শুরু হয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
এ দিকে বেহালার বকুলতলার কাছে এই দুর্ঘটনার পরেই রাস্তার ‘স্প্রিং ব্যারিয়ার’ লাগানোর তোড়জোড় শুরু করেছে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ। বেপরোয়া বাসকে নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং বাস লেন আলাদা করতে এই স্প্রিং ব্যারিয়ার লাগানো হবে বলে জানিয়েছেন এক ট্র্যাফিক পুলিশ কর্তা। সেই সঙ্গে রাস্তায় আরও কয়েকটি স্পিডোমিটার ক্যামেরা বসানো যায় কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হবে বলে তিনি জানান। বুধবার কলকাতা পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার পদমর্যাদার এক পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘কী কারণে এই দুর্ঘটনা, তা এখনও নিশ্চিত নয়। কারণ জানতে প্রয়োজনীয় সব রকম পরীক্ষা করা হবে। গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এই রাস্তায় পুলিশের নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’