অঘটন: দুর্ঘটনাগ্রস্ত একটি বাস। ফাইল চিত্র
দুর্ঘটনার পরে পুলিশ হাসপাতালে ব্যস্ত ছিল আহতদের চিকিৎসা করাতে। অভিযোগ, পুলিশের সেই ব্যস্ততার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে হাসপাতাল থেকেই গা ঢাকা দিয়েছে হাওড়ার দুর্ঘটনার সেই বাসচালক।
শনিবার দুপুরে হাওড়া থেকে বেপরোয়া গতিতে চলা একটি ৭৩ নম্বর রুটের বাস অন্য একটি বাসের পিছনে ধাক্কা মারে। উত্তর বন্দর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুর্ঘটনায় আহত চার জনকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। অন্য তিন জনকে হাওড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আহতদের মধ্যে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান শিবপুরের বাসিন্দা মনোজকুমার জৈন। লালবাজার সূত্রের খবর, আহত বাকি তিন জনের চিকিৎসা করাতে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ব্যস্ত ছিলেন উত্তর বন্দর থানার এক পুলিশকর্মী।
তিনি হঠাৎ দেখেন, আহত এক জন ফেরার। পরে জানা যায়, সেই যুবকই বাসের চালক। যার বিরুদ্ধে পুলিশ বেপরোয়া বাস চালিয়ে মৃত্যু ঘটানো-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে।
ওই দুর্ঘটনার পরে ওই চালক নিজের কেবিনে আটকে পড়ে। গ্যাসকাটার দিয়ে কেবিনের দরজা কেটে চালককে উদ্ধার করেছিল পুলিশ। হাসপাতাল থেকে সে পালানোর পরে পুলিশের বিরুদ্ধেই কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। দুর্ঘটনার আগে পর্যন্ত ওই বাসটির বিরুদ্ধে ৩৭টি মামলা হয়েছিল। সোমবার রাত পর্যন্তও অভিযুক্ত চালককে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ঢুকতেই পুলিশের ফাঁড়ি রয়েছে। পুলিশ ছাড়াও হাসপাতালের নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষীও রয়েছে। তা সত্ত্বেও পুলিশ-নিরাপত্তারক্ষীর ফাঁক গলে অভিযুক্ত চালক কী করে পালাল, তা নিয়ে তাই প্রশ্ন উঠছে।
ঘটনার কথা স্বীকার করে ডিসি (বন্দর) ওয়াকার রেজা বলেন, ‘‘ওই সময়ে আহতদের দ্রুত চিকিৎসা করানোয় ব্যস্ত ছিলেন কর্তব্যরত পুলিশকর্মী। তিনিই খেয়াল করেন চালক পলাতক। তবে আমরা ঘটনার পুরো তদন্ত করছি। পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতি প্রমাণিত হলে নিশ্চয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
এ প্রসঙ্গে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘পুলিশ যখন আহতকে সঙ্গে নিয়ে এসেছে, তখন তাকে নজরে রাখার কথা পুলিশেরই। ঘটনার কথা আমি জানি না। এ রকম ঘটনা একেবারেই বাঞ্ছনীয় নয়। আমরা পুলিশের সঙ্গে কথা বলব।’’