ভোগান্তি: প্রতি দিনের দৃশ্য। ছবি: অরুণ লোধ
যানজট সমস্যায় জেরবার বজবজ। এই যানজটের অন্যতম কারণ রাস্তার ধারে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা তেলের ট্যাঙ্কার। ট্রাক টার্মিনাল থাকলেও বহু চালকই তা এড়িয়ে যান বলে অভিযোগ। এমনকী পুলিশের তরফ থেকে লাগানো বোর্ডও রাতের অন্ধকারে চুরি হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। নিত্য যানজটে বিরক্ত সাধারণ মানুষ। ট্যাঙ্কার পার্কিং বন্ধ না হওয়ায় পুলিশের সক্রিয়তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন পুরসভার কর্তারা। তবে এর বিরুদ্ধে পুরসভা এবং পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালাবে বলে জানান এক পুলিশ কর্তা।
বজবজ পুরসভা সূত্রের খবর, সুভাষ উদ্যানের মোড়ের পর থেকে রাস্তার ধারে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে তেলের ট্যাঙ্কার। কখনও কখনও দু’টি সারিতেও ট্যাঙ্কার দাঁড়িয়ে থাকে। ফলে রাস্তা সরু হয়ে যায়। কিন্তু বজবজের প্রধান রাস্তা বলতে ওই একটিই রয়েছে। একাধিক রুটের অটো, বাস, বড় লরি ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে। কিন্তু রাস্তা সরু হওয়ার ফলে প্রতি দিন যানজট হয়। বিশেষ করে সকালের দিকে। এই যানজট এড়াতে গিয়ে অনেক সময়েই পথ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
বজবজ পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তৃণমূলের গৌতম দাশগুপ্ত জানান, কোনও ভাবেই যেন বেআইনি পার্কিং করা না হয় সে বিষয়ে জেলাশাসক নির্দেশও দিয়েছেন। তার পরে পুরসভা এবং জেলাপুলিশ একসঙ্গে বৈঠকও করে। সেখানে ঠিক হয় কোনও ভাবেই রাস্তার ধারে তেলের ট্যাঙ্কার দাঁড়াতে দেওয়া চলবে না। তা ছাড়া এর থেকে পুরসভার কোনও আয় হয় না। সুভাষ উদ্যানের টার্মিনালে ট্যাঙ্কারগুলি দাঁড়ালে যানজট কমবে, পুরসভার আয়ও হবে। কিন্তু অভিযোগ, ট্যাঙ্কার চালকরা এই পার্কিং ফি এড়াতে রাস্তাতেই পার্কিং করছেন। ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। পুলিশ কার্যত নিস্ক্রিয় বলেও তাঁদের অভিযোগ।
এক অফিস যাত্রী দ্বীপ দণ্ড বলেন, ‘‘একে তো অটোতে প্রায় ঝুলতে ঝুলতে যাই, তার ওপরে যে ভাবে যানজটে আটকে গিয়ে গাড়ির জট পাকিয়ে যায়, তাতে যে কোনও সময়েই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বিশেষ করে সকালে অফিস যাওয়ার সময়ে ট্রেন ধরার তাড়া থাকে। তখন বেশি অসুবিধা হয়। হেঁটে যাওয়ার কথা তো ভাবাই যায় না।’’
এই এলাকার আশেপাশেই স্কুল, হাসপাতাল রয়েছে। স্টেশনে যাওয়ার একমাত্র ভরসা এই রাস্তা। এমনকী ধর্মতলা, বাটানগর আসার ভরসাও এই রাস্তা। সেখানেই এমন দুর্ভোগে নাজেহাল হন সাধারণ মানুষ। গৌতমবাবু বলেন, ‘‘আমি মনে করি পুলিশ সক্রিয় হলে এ সব বন্ধ করা যায়। পুলিশের আরও বেশি সক্রিয় হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।’’ একই মত ফেডারেশন অফ ওয়েস্টবেঙ্গল ট্রাক অ্যাসোসিয়েশন এর যুগ্ম সম্পাদক সজল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘রাস্তায় দাঁড়ানো উচিত নয়। এতে সকলেরই অসুবিধা হয়। আমরা বহুবার বলেছি, কিন্তু এক শ্রেণির চালকরা এটা করে থাকেন। পুলিশের কাছে অনুরোধ করব তাঁরা তাঁদের মতো করে ব্যবস্থা নিন।’’ পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘দ্রুত অভিযান চালানো হবে। এসব বরদাস্ত করা হবে না।’’