শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। —ফাইল চিত্র।
পরিকল্পিত ভাবেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির পরিবেশ বিষিয়ে তোলা হচ্ছে। নেপথ্যে রয়েছেন বহিরাগতেরা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার র্যাগিংয়ের প্রসঙ্গে এমনটাই মন্তব্য করলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সাধারণত তাঁরা হস্তক্ষেপ করেন না। তবে দেখেশুনে তাঁর ধারণা, এ সবের নেপথ্যে রয়েছে ‘পরিকল্পিত দৃষ্টিভঙ্গি’।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে আরও এক বার র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে হস্টেল ছেড়েছেন এক ছাত্র। তা নিয়ে শোরগোলের মাঝে ব্রাত্যকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘যাদবপুরের ঘটনার পর তো আমরা উচ্চশিক্ষা দফতর থেকে তদন্তকারী দল পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু বর্তমানে উচ্চশিক্ষা দফতরের সঙ্গে আচার্যের সংঘাত রয়েছে। আমরা এই সমস্ত ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করি না। আগামী দিনে যদি প্রশাসনিক কাঠামো পরিবর্তিত নয়, নতুন দায়িত্বে যাঁরা আসবেন, তাঁরা আমাদের থেকে পরামর্শ চাইলে দেব।’’
এর পরেই যাদবপুর এবং রাজ্যের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রসঙ্গে নিজের বক্তব্য জানান শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘বহিরাগতদের হস্তক্ষেপে ক্রমশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলির পরিবেশ বিষিয়ে উঠছে। এর মধ্যে একটা পরিকল্পিত দৃষ্টিভঙ্গি আছে বলে আমি মনে করি। সেটা একেবারেই কাম্য নয়। সুপ্রিম কোর্টের কাছে আমরা সব নথি এবং তথ্য পাঠাচ্ছি। আশা করি এর সুরাহা করতে পারব।’’
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি বছর ২৪ ডিসেম্বর সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয়। এ বছর তা হবে কি না, সে প্রসঙ্গে ব্রাত্য অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্যের ভূমিকা টেনে আনেন। তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট তো বলেই দিয়েছে, এঁরা কেউ উপাচার্য নন। এঁরা হলেন ‘কেয়ারটেকার’ আধিকারিক। সমাবর্তনের বিষয়ে ওঁরা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। আমাদের এখানে কোনও বক্তব্য নেই। সমাবর্তন করলে ওঁরা নিজ-দায়িত্বে করবেন।’’
গত অগস্ট মাসে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের তিন তলার বারান্দা থেকে নীচে পড়ে যান বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের (স্নাতক) এক ছাত্র। পরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। তিনি র্যাগিংয়ের শিকার বলে অভিযোগ ওঠে। গ্রেফতার করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং প্রাক্তনীদের। এখনও সেই মামলা চলছে। বিষয়টি তদন্তাধীন। তার মাঝে বুধবার সকালে কর্তৃপক্ষকে ইমেল মারফত হেনস্থার কথা জানান ওই মেন হস্টেলেরই আবাসিক আর এক ছাত্র। তিনি জানান, হস্টেলে তিনি নিজেকে নিরাপদ মনে করছেন না। অন্য হস্টেলে তাঁকে থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন ওই ছাত্র।