উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে ১৭ দিন ধরে আটকে থাকা কর্মীরা। ছবি: পিটিআই ।
তাঁরা যে সহজে বেরোতে পারবেন না, ধস নেমে উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গের মুখ বন্ধ হওয়ার পর তা বুঝতে পেরেছিলেন আটকে থাকা ৪১ কর্মী। তার পর টানা ১৭ দিন সেই সুড়ঙ্গেই কেটেছে তাঁদের। চলেছে বেঁচে থাকার লড়াই। মাঝেমধ্যে ভেঙে পড়েছেন। কিন্তু একে অপরের মনোবল জুটিয়ে আবার চলেছে বাইরে বেরিয়ে প্রিয়জনদের সঙ্গে দেখা করার অপেক্ষা। সেই অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন বিশ্বজিৎ কুমার, সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গে আটকে পড়া ঝাড়খণ্ডের শ্রমিক।
বুধবার সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর সঙ্গে কথা বলার সময় সুড়ঙ্গের ভিতরের ‘অগ্নিপরীক্ষা’র বর্ণনা দিয়েছেন তিনি। বিশ্বজিৎ বলেন, ‘‘যখন সুড়ঙ্গের একাংশ ভেঙে পড়ে তখনই বুঝেছিলাম আমরা আটকে গিয়েছি। ভয় হচ্ছিল। তবে আমাদের আশাও ছিল।’’
বিশ্বজিৎ আরও বলেন, ‘‘আটকে পড়ার পর প্রায় এক দিন আমরা বিভিন্ন অসুবিধার সম্মুখীন হয়েছিলাম। কিন্তু পরে একটি পাইপের সাহায্যে আমাদের চাল, ডাল এবং শুকনো ফল পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। একটি মাইকও পাঠানো হয়। সেই মাইক দিয়ে আমি এবং আমার সহকর্মীরা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলি। এর পর চলতে থাকে অপেক্ষা।’’
দীপাবলির দিন ভোরবেলা থেকেই সুড়ঙ্গে আটকে পড়েছিলেন ওই ৪১ জন কর্মী। ফলে দীপাবলি উদ্যাপন করতে পারেননি তাঁরা। তাই এখন দীপাবলি পালন করবেন বলে জানিয়েছেন বিশ্বজিৎ। তাঁর কথায়, ‘‘আমি এখন খুশি, এ বার দীপাবলি উদ্যাপন করব।’’
প্রসঙ্গত, গত ১২ নভেম্বর উত্তরকাশী জেলার ব্রহ্মতাল-যমুনোত্রী জাতীয় সড়কের উপর সিল্কিয়ারা এবং ডন্ডালহগাঁওের মধ্যে নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গের একাংশ ধসে পড়ে। সুড়ঙ্গটি সাড়ে আট মিটার উঁচু এবং প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার দীর্ঘ। ভাঙা সুড়ঙ্গের ভিতরেই প্রায় ৬০০ মিটার ধ্বংসস্তূপের পিছনে আটকে পড়েন কর্মরত ৪১ জন শ্রমিক। সেই ঘটনার ১৭ দিন পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ধ্বংসস্তূপ খুঁড়ে ওই ৪১ জনকে উদ্ধার করেছেন উদ্ধারকারীরা। এর পরে পরেই ওই কর্মীদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। হাসপাতালে তাঁদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। খুব শীঘ্রই তাঁদের বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছে উত্তরাখণ্ড প্রশাসন।