চিৎপুর লেভেল ক্রসিং পেরোনোর অপেক্ষায় পরপর দাঁড়িয়ে রয়েছে বাস।
মাধ্যমিক চলাকালীন টালা চত্বরে যানজট নিয়ন্ত্রণে সব মহলের প্রশংসা কুড়িয়েছিল কলকাতা পুলিশ। আজ, বৃহস্পতিবার শুরু হচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক। তবে তার ঠিক আগের দিন বুধবার ওই চত্বর ঘুরে দেখা গেল, দেদার চলছে ট্র্যাফিক আইন লঙ্ঘন। পুলিশের তৈরি নয়া পথ-নির্দেশিকা অমান্য করে কোথাও ঢুকে পড়ছে অটো। কোথাও আবার নিয়ম উড়িয়ে মোটরবাইকে সওয়ার হয়েছেন হেলমেট পরা ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীও। গাড়ির মুখোমুখি এসে যাওয়া অটো বা বাইকের জন্য সেখানে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে প্রতি মুহূর্তে।
চিৎপুরে লেভেল ক্রসিং তৈরি হওয়ার পরেই নয়া পথ-নির্দেশিকা ঘোষণা করেছিল কলকাতা পুলিশ। এত দিন কিছু বাস এবং ছোট গাড়িকে চিৎপুর লকগেট উড়ালপুল দিয়ে কলকাতা থেকে বি টি রোড অভিমুখে চালানো হচ্ছিল। কিছু গাড়িকে কলকাতার দিকে পাঠানো হচ্ছিল কাশীপুর রোড হয়ে। বাকি সব গাড়ি এবং বাস যাচ্ছিল চিড়িয়ামোড়-পাইকপাড়া-বেলগাছিয়া সেতু হয়ে। যদিও অনেকেরই বক্তব্য ছিল, কলকাতার দিকে আসার জন্য চিৎপুর লকগেট উড়ালপুল ব্যবহার করা গেলে ভোগান্তি কমবে। ওই উড়ালপুল কেন উভমুখী হিসেবে ব্যবহার করা হবে না, সেই প্রশ্নও ছিল। লেভেল ক্রসিং তৈরি হওয়ার পরে পুলিশ নির্দেশ দিয়েছে, লকগেট উড়ালপুল ধরে শুধুই কলকাতামুখী গাড়ি যেতে পারবে। নতুন ওই নির্দেশিকা অনুযায়ী ভারী গাড়ি ও বাস পাঠানো হচ্ছে প্রাণকৃষ্ণ মুখার্জি রোড, লেভেল ক্রসিং, জগন্নাথ ঘাট রোড হয়ে কাশীপুর রোডে। সেখান থেকে সেগুলির খগেন চ্যাটার্জি রোড হয়ে বি টি রোডে বেরোনোর কথা। অন্য দিকে, কাশীপুর রোড ব্যবহার হচ্ছে ছোট গাড়িগুলিকে কলকাতা থেকে বি টি রোডে আনার জন্য।
এ দিন দেখা গেল, লেভেল ক্রসিং হয়ে আসা ভারী গাড়ি ও বাস এবং কাশীপুর রোড ধরে আসা ছোট গাড়ি ওই রাস্তার যে অংশে মিলছে, সেখানেই প্রবল যানজট। উল্টো দিকের গোপাললাল ঠাকুর রোড ধরে আসা অটো এবং মোটরবাইকও খগেন চ্যাটার্জি রোডের দিকে যাওয়ার বদলে ঢুকে পড়ছে কাশীপুর রোডে। যার জন্য ওই পথ বিপদসঙ্কুল হয়ে পড়ছে। এর উপরে চক্ররেল যাওয়ার সময়ে অন্তত পাঁচ-সাত মিনিটের জন্য বন্ধ থাকছে লেভেল ক্রসিংয়ের গেট। সে সময়ে গাড়ির লাইন পৌঁছে যাচ্ছে প্রাণকৃষ্ণ মুখার্জি রোড পর্যন্ত।
ট্র্যাফিক আইন না-মানার কারণ কী? এক অটোচালক বলেন, ‘‘আমাদের সব যাত্রীই তো এই রুটে। পুলিশ নিজের মতো প্রায়ই পথ বদলে দিচ্ছে। এমন চলতে থাকলে অটো চালিয়ে লাভ কী? খগেন চ্যাটার্জি রোড হয়ে বি টি রোডে বেরিয়ে আমরা কোন দিকে যাব?’’ ঘটনাস্থলে উপস্থিত শ্যামবাজার ট্র্যাফিক গার্ডের এক আধিকারিক বললেন, ‘‘এটাই ওই অটোর রুট। করার কিছু নেই। ঘুরপথে গেলে সত্যিই ওদের সমস্যা হবে।’’
কিন্তু কোনও বিপদ ঘটে গেলে? কলকাতা পুলিশের ডিসি (ট্র্যাফিক) রূপেশ কুমার বলেন, ‘‘কয়েক দিনের মধ্যেই এই সমস্যা সমাধানে বিকল্প বার করা হবে।’’