ভাঙা বাড়ির আসবাব রাখতে গুদামের খোঁজ

কী অবস্থায়, কেমন ভাবে তাঁদের জিনিসপত্র রাখা থাকছে, তা প্রয়োজন মতো গিয়ে দেখেও আসতে পারবেন ওই সব জিনিসপত্রের মালিকেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:১৬
Share:

বৌবাজারের সেকরাপাড়া লেনে। ফাইল চিত্র।

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ বিপর্যয়ে বিপজ্জনক বাড়ির বাসিন্দাদের আগেই হোটেলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে বাসিন্দাদের ঠাঁই হলেও, ভাঙা বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া আসবাব-সহ অন্যান্য দরকারি জিনিসপত্র সুরক্ষিত রাখার ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বৌবাজারের সঙ্কীর্ণ গলির ভিতরে ওই জায়গা পাওয়া সম্ভব নয় বুঝেই ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো কর্তৃপক্ষ শহরে গুদামের খোঁজ শুরু করেছেন। সুড়ঙ্গ নির্মাণ সংস্থার ব্যবস্থাপনায় সেখানেই ভেঙে পড়া বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া জিনিসপত্র গচ্ছিত রাখবেন বৌবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বাসিন্দারা।

Advertisement

কী অবস্থায়, কেমন ভাবে তাঁদের জিনিসপত্র রাখা থাকছে, তা প্রয়োজন মতো গিয়ে দেখেও আসতে পারবেন ওই সব জিনিসপত্রের মালিকেরা। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর নির্মাণ সংস্থা কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে কর্পোরেশন লিমিটেড (কেএমআরসিএল) সূত্রের খবর, সুড়ঙ্গ বিপর্যয়ের ঘটনায় এ পর্যন্ত ন’টি বাড়ি বিভিন্ন ভাবে ভেঙেছে। তার মধ্যে চারটি বাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ছে। এ ছাড়াও আরও ১০টি বাড়ি বসবাসের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে বলে মনে করছেন কেএমআরসিএল কর্তৃপক্ষ। তাঁরা মনে করেন, ওই বাড়িগুলি ভেঙে ফেলতে হবে। তবে এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে নীতিন সোমের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পরে। ওই কমিটি বাড়িগুলির স্বাস্থ্য খতিয়ে দেখছে।

৭বি সেকরাপাড়া লেনের বাসিন্দা ঝিলিক মৈত্রের বাড়ি ভেঙে পড়েছে। বাড়ি সম্পূর্ণ ভাঙার পরে আবর্জনার স্তূপ সরিয়ে কতটা কী পাওয়া যাবে, তা এখনও জানেন না ঝিলিকবাবু। তবে ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত ছেলের আট বছরের পুরনো প্রেসক্রিপশন, তিন আলমারি বই আর উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া লং প্লেয়িং রেকর্ডের খোঁজ করছেন তিনি। ওই সব জিনিসের কিছুটা উদ্ধার হওয়ার আশায় তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘বাড়ি ভাঙার সময়ে যেন আমাদের ডাকা হয়। দরকারি জিনিস উদ্ধার করে তা সাময়িক ভাবে রাখার ব্যবস্থা করা গেলে ভাল হয়।’’

Advertisement

১১/১ দুর্গা পিতুরি লেনের বাসিন্দা নিমাইচাঁদ লাহা শিপিং কর্পোরেশনের প্রাক্তন চিফ ইঞ্জিনিয়ার। তাঁর বাড়ি ভাঙার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। দিন দু’য়েক আগে জরুরি এবং মূল্যবান জিনিসপত্র নেওয়ার জন্য বিশেষ ক্রেন ব্যবহার করে তাঁকে বাড়ির ভিতরে ঢোকার সুযোগ করে দেওয়া হয়। কিছু জিনিসপত্র বার করতে পারলেও বাড়ির মধ্যে রয়ে গিয়েছে আসবাব-সহ আরও অনেক কিছুই। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘কেএমআরসিএল কর্তৃপক্ষ বাড়ি ভাঙার সময়ে আমাদের উপস্থিত থাকতে বলেছেন, বাড়ির বাইরের দেওয়াল ভাঙার কাজ চলছে। এখনও জিনিসপত্র উদ্ধার করার মতো অবস্থা আসেনি। জিনিসপত্র উদ্ধার হলে তা রাখার মতো জায়গা লাগবে।’’

কেএমআরসিএল সূত্রের খবর, সুড়ঙ্গ বিপর্যয়ে যাঁদের দোকান বা ব্যবসা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গিয়েছে, তাঁদের জন্য সাময়িক ভাবে বিকল্প জায়গার কথাও ভাবা হচ্ছে। পোদ্দার কোর্টে কেএমআরসিএলের যে ভবন রয়েছে, সেখানে ব্যবসায়ীদের সাময়িক ভাবে সরানো হতে পারে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কেএমআরসিএলের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বৌবাজার এলাকায় বাসিন্দাদের ক্ষতির পরিমাণ অনেক। তার খানিকটা পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement