Boom Barrier

নিষ্ক্রিয় হয়ে রাজপথে বেআইনি পারাপার ঠেকানোর ‘বুম ব্যারিয়ার’

দিনকয়েক আগে শহরের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে বুম ব্যারিয়ারের নিয়ে পর পর অভিযোগ কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের সামনে আসে। তার পরেই প্রতিটি গার্ডকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

Advertisement

চন্দন বিশ্বাস

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:৩৩
Share:

একত্রিত: রুবি মোড়ে এক জায়গায় জড়ো করে রাখা একাধিক বুম ব্যারিয়ার। —নিজস্ব চিত্র।

কোথাও বাতিস্তম্ভের মতো দাঁড় করানো আছে পথচারীদের আটকানোর বুম ব্যারিয়ার। তাকে ঘিরে সেজেছে ফুটপাতের স্টল। বুম ব্যারিয়ারের লোহার অংশের কাজ এখন স্টলে প্লাস্টিকের ছাউনি টাঙানোয় সাহায্য করা। আর সে সবের সামনে দিয়েই দলে দলে নিয়ম ভেঙে চলছে পারাপার।

Advertisement

ধর্মতলা এবং এস এন ব্যানার্জি রোডের সংযোগস্থলে বুম ব্যারিয়ারের এই অবস্থা নিয়ে সংলগ্ন এক হকারকে জিজ্ঞেস করতেই তিনি বললেন, ‘‘এটি বসানোর পরে কয়েক দিন ঠিক ছিল। তার পর থেকে ও ভাবেই রয়েছে। মেরামতি হয় না দেখে দোকানের কাজেই এখন ব্যবহার হচ্ছে।’’

শুধু ধর্মতলা নয়, শহর ঘুরে একাধিক জায়গায় বুম ব্যারিয়ারের এমন ব্যবহার নজরে এল। কোথাও গোটা তিনেক বুম ব্যারিয়ারকে একসঙ্গে করে রাখা, কোথাও আবার অকেজো অবস্থায় উল্টো ভাবে পড়ে। কিছু কিছু জায়গায় সচল অবস্থায় দেখা গেলেও নামানো-ওঠানোর জন্য কোনও পুলিশ অথবা সিভিক ভলান্টিয়ার দেখা গেল না।

Advertisement

দিনকয়েক আগে শহরের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে বুম ব্যারিয়ারের নিয়ে পর পর
অভিযোগ কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের সামনে আসে। তার পরেই প্রতিটি গার্ডকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেগুলির রক্ষণাবেক্ষণের খেয়াল রাখার পাশাপাশি, তা নামানো-ওঠানোর দায়িত্বে পুলিশ অথবা সিভিক ভলান্টিয়ার থাকার কথাও বলা হয়। তবে সেই নির্দেশের পরেও যে পরিস্থিতি বদলায়নি, তা শহরের পথে ঘুরতেই দেখা গেল।

গড়িয়াহাট চত্বরে দেখা গেল, কয়েকটি বুম ব্যারিয়ার লাগানো থাকলেও তা চালনা করার কোনও কর্মী নেই। সবগুলিই ওঠানো রয়েছে। ফলে পথচারীরা সিগন্যালের তোয়াক্কা না করে বিপজ্জনক ভাবে রাস্তা পারাপার করছেন। এমনও দেখা গেল, বুম ব্যারিয়ার উল্টো দিকে সরানো রয়েছে। এ নিয়ে প্রশ্ন করতেই কর্তব্যরত এক পুলিশকর্মীর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘বাহিনীতে এত লোক কোথায় যে ওটা সামলানোর জন্য এক জন থাকবেন? এমনিতেই অতিরিক্ত ডিউটি করে পারছি না, এর পর যদি বুম ব্যারিয়ারও সামলাতে হয়, তা হলে দেখতে হবে না।’’ একই অবস্থা ইএম বাইপাসের রুবি ক্রসিংয়েও। এখানেও কয়েকটি বুম ব্যারিয়ারকে এক জায়গায় জড়ো করে রাখা রয়েছে। একই রকম ছবির দেখা মিলল শিয়ালদহ, এক্সাইড মোড়েও। তবে এর বিপরীত ছবি দেখা গেল চিংড়িঘাটায়। বেলাগাম পারাপার ঠেকাতে সেখানে এখনও রাস্তার একটি বড় অংশকে গার্ডরেল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে।

পথচারীদের লাগামহীন পারাপার ঠেকাতে এবং পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু কমাতে ২০১৭ সালে প্রথম বার শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে বুম ব্যারিয়ারের ব্যবহার শুরু করে কলকাতা পুলিশ। অভিযোগ, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অল্প কয়েক দিনেই পুরনো অবস্থায় ফেরে গুরুত্বপূর্ণ ওই সব মোড়ের চেহারা। পরে নগরপাল বিনীত গোয়েলের নির্দেশে শহরের বিভিন্ন জায়গায় বুম ব্যারিয়ার লাগানো শুরু হয়। এমনকি এগুলির ব্যবহার যাতে ঠিক ভাবে হয়, সেই নির্দেশও তিনি দিয়েছিলেন। অভিযোগ, তার পরেও নিচুতলার পুলিশকর্মীদের একাংশের ঢিলেমি এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পরিস্থিতির যে বদল হয়নি, তা-ই উঠে এল শহর ঘুরে।

লালবাজারের এক পুলিশকর্তার অবশ্য দাবি, ‘‘এগুলির দেখাশোনায় শহরের অধিকাংশ জায়গাতেই পুলিশকর্মী থাকেন। তাঁরাই নামানো-ওঠানোর কাজ করেন। সেই মতোই নির্দেশ দেওয়া আছে। এ ক্ষেত্রে কোনও গাফিলতি নজরে এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement