Thakurpukur

পরিবারের তিন সদস্যের মৃত্যু, সন্দেহ আত্মহত্যা

পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম গোবিন্দ কর্মকার (৮০), রাণু কর্মকার (৭০) এবং দেবাশিস কর্মকার (৫০)।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০২০ ০২:১৬
Share:

এই বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় একই পরিবারের তিন জনের দেহ। মঙ্গলবার, ঠাকুরপুকুরে। নিজস্ব চিত্র

বাড়ির দরজার সামনে অনেক ডাকাডাকি করেও সাড়া পাওয়া যায়নি বৃদ্ধ, তাঁর স্ত্রী এবং প্রতিবন্ধী ছেলের। এক প্রতিবেশী তাঁদের ঘরের দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকে দেখেন মেঝের উপরে তিন জন চিৎ হয়ে পড়ে রয়েছেন। মঙ্গলবার ঠাকুরপুকুর এলাকার ওই ঘটনায় পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তিন জনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। পুলিশ জানায়, লকডাউনে পরিবারটি প্রবল আর্থিক সঙ্কটে পড়েছিল। তার জেরেই এই ঘটনা কি না, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। তাঁরা জানান, বাড়ির দেওয়ালে লেখা ছিল, পরিবারের লোকজন আত্মহত্যা করছেন।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম গোবিন্দ কর্মকার (৮০), রাণু কর্মকার (৭০) এবং দেবাশিস কর্মকার (৫০)। গোবিন্দবাবু ও রাণুদেবীর একমাত্র ছেলে দেবাশিসবাবু জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী ছিলেন। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, তিন জনই বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন সকাল সাতটা নাগাদ ঠাকুরপুকুর থানার সত্যনারায়ণ পল্লি এলাকার ওই বাড়ির দরজা খুলতেই তিন জনের দেহের পাশে একটি কাপ দেখতে পাওয়া যায়। ওই কাপের মধ্যে একটি কাগজ পেয়েছে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানান, কাগজে লেখা ছিল, ‘‘এখানে বিষ আছে, কেউ হাত দেবেন না।’’

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গোবিন্দবাবু একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। ওই সংস্থাটি বহু দিন আগে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ফলে গোবিন্দবাবু ও তাঁর পরিবার প্রবল আর্থিক কষ্টে ভুগছিলেন। গত কয়েক বছর ধরে বৃদ্ধ ঘড়ি মেরামতির কাজ করছিলেন। কিন্তু লকডাউনের জন্য সেই কাজও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আরও চাপের মধ্যে পড়েন তিনি। দিন চারেক আগে তাঁর স্ত্রী হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হন। তার উপরে প্রতিবন্ধী ছেলে কোনও কাজ করতে না পারায় চরম মানসিক অবসাদে ভুগছিল ওই পরিবারটি।

Advertisement

তদন্তকারীরা জানান, সম্ভবত সোমবার গভীর রাতে তিন জনে মিলে বিষ খান। মৃতদেহগুলির সামনে পড়ে থাকা কাপে বিষ রাখা ছিল। স্থানীয় বাসিন্দা সুবীর মিত্র বলেন, ‘‘গোবিন্দবাবু কোনও দিনই কারও সঙ্গে মেলামেশা করতেন না। একচিলতে একটি ঘরেই থাকতেন তিন জন।’’ লকডাউনের সময়ে ওই পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু
করেছে পুলিশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement