ফাইল চিত্র।
প্রতি বছরই উৎসবের মরসুম শুরু হওয়ার ঠিক মুখে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় শব্দবাজি তৈরির খাসতালুক বারুইপুর-চম্পাহাটিতে নিষিদ্ধ বাজির রমরমা বাড়ে বলে অভিযোগ রয়েছে স্থানীয়দের। প্রতি বারই পুলিশ আশ্বাস দেয়, ওই অঞ্চলে চলা বেআইনি বাজি কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হবে। কিন্তু বছরের পর বছর ছবিটা যে বদলায় না, তার প্রমাণ আবারও দেখা গেল বৃহস্পতিবার সকালে, বারুইপুর থানার হারালের সোলগোলিয়া গ্রামে। একটি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে গুরুতর জখম হলেন দুই শ্রমিক। তাঁদের নাম দুলাল নস্কর ও অরিন্দম সর্দার। গুরুতর জখম অবস্থায় দু’জনকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, নিয়ম না মেনে চলছিল ওই কারখানাটি।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই কারখানায় ‘জেনারেটর তুবড়ি’ তৈরি হচ্ছিল। এক বাসিন্দা জানান, সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ কান ফাটানো শব্দে আশপাশ কেঁপে ওঠে। তার পরেই কারখানা থেকে আর্তনাদ শোনা যায়। দুলাল ও অরিন্দমকে উদ্ধার করে বারুইপুর হাসপাতালে নিয়ে যান বাসিন্দারা। পরে তাঁদের ন্যাশনাল মেডিক্যালে স্থানান্তরিত করা হয়। ঘটনার পর থেকে পলাতক কারখানার মালিক সন্তোষ মণ্ডল।
এ দিন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, দু’টি ঘর নিয়ে ওই কারখানা। বিস্ফোরণে উড়ে গিয়েছে অ্যাসবেস্টসের ছাদ। ঘরের দেওয়ালের অধিকাংশ জায়গায় গর্ত হয়ে গিয়েছে। মেঝে ফেটে চৌচির। তদন্তকারীরা জানান, কারখানা থেকে কোনও রাসায়নিক উদ্ধার না হলেও কয়েক বস্তা লাল ও সাদা রঙের বারুদ পাওয়া গিয়েছে। মিলেছে ‘জেনারেট তুবড়ি’-র একাধিক খোলও।
বিস্ফোরণের খবর পেয়ে আসেন বারুইপুর জেলা পুলিশের কর্তারা। জখম দুই শ্রমিকের বয়ান অনুযায়ী, শর্ট সার্কিটের জেরে বারুদে আগুন ধরে গিয়েছিল। তার পরেই বিস্ফোরণ হয়। বছরখানেক আগে ওই কারখানা থেকে কিছু দূরে আর একটি কারখানায় বিস্ফোরণে মারা গিয়েছিলেন দু’জন। বারুইপুরের জেলা পুলিশ সুপার রশিদ মুনির খান বলেন, ‘‘ওই এলাকায় তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে। কোনও ভাবেই বেআইনি কারখানা চলতে দেওয়া হবে না।’’