বঙ্গ সফরে এসে ‘কৃষক সুরক্ষা অভিযান’-এর সূচনা করেছিলেন নড্ডা। —নিজস্ব চিত্র।
শনিবার মালদহের মাঠে বসে খিচুড়ি খাবেন বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা। একা নন, রাজ্য নেতাদের নিয়ে হাজার তিনেক কৃষকের সঙ্গে এক পঙ্ক্তিতে বসে নড্ডার মধ্যাহ্নভোজের ব্যবস্থা করছে রাজ্য বিজেপি। গেরুয়া শিবির সেই গণভোজ কর্মসূচির নাম দিয়েছে ‘সহভোজ’।
এখনও পর্যন্ত নড্ডার যে সফরসূচি জানা গিয়েছে, তাতে শুক্রবার রাতেই কলকাতায় আসছেন তিনি। শনিবার তাঁর প্রধান কর্মসূচি নবদ্বীপ থেকে ‘পরিবর্তন যাত্রা’ নামে বিজেপি-র প্রস্তাবিত রথযাত্রার সূচনা। রাজ্যের যে পাঁচটি রথ বার করার সিদ্ধান্ত বিজেপি নিয়েছে, এটি তারই একটি। এই রথ উত্তরবঙ্গের সব বিধানসভা এলাকায় ঘোরানোই লক্ষ্য বিজেপি-র। তবে রথযাত্রার সূচনার আগে নড্ডা শনিবার সকালে প্রথম যাবেন মালদহে। সেখানকার সাহাপুরের একটি মাঠে হবে গণভোজ। তাতে অংশ নেওয়ার পরে ইংরেজবাজারে একটি রোড শো করে নবদ্বীপে যাবেন নড্ডা।
রাজ্য বিজেপি নড্ডার ‘সহভোজ’ কর্মসূচিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েই দেখছে। নীলবাড়ি দখলের লক্ষ্যে কৃষকমন জয় করতে ‘কৃষক সুরক্ষা অভিযান’ নামে রাজ্যে কর্মসূচি চলছে বিজেপি-র। ডিসেম্বরে বঙ্গসফরে এসে নড্ডাই পাঁচটি বাড়িতে ‘মুষ্টিভিক্ষা’ করে সেই কর্মসূচির সূচনা করেছিলেন। তখনই ঠিক হয়েছিল, ভিক্ষায় সংগৃহীত চাল ও সবজি নিয়ে হবে গণভোজ। তারই প্রথমটি মালদহে হতে চলেছে শনিবার। সেখানে নড্ডার সঙ্গে পংক্তিভোজে যোগ দেওয়ার জন্য তিন হাজার কৃষককে নিয়ে আসার লক্ষ্য নিয়েছে বিজেপি। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ-সহ রাজ্যনেতৃত্বের পাশাপাশি গণভোজে অংশ নেবেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী। কেন এমন কর্মসূচি? দেবশ্রী বলেন, ‘‘কৃষকরা আমাদের অন্নদাতা। তাঁরা সমাজের অন্যতম স্তম্ভ। তাঁদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্যই এই কর্মসূচি। কৃষকদের সম্পর্কে বিজেপি-র ভাবনা স্পষ্ট করতে খোদ নড্ডা’জি তাঁদের সঙ্গে বসে খাবেন। সকলের জন্যই এক ব্যবস্থা থাকবে।’’
এই মাঠেই হবে নড্ডার ‘সহভোজ’ কর্মসূচি।
এর আগে বঙ্গসফরে এসে আদিবাসী, বাউল, বস্তিবাসী থেকে কৃষক-সহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের পরিবারে গিয়ে মধ্যাহ্নভোজ সেরেছেন নড্ডা, অমিত শাহ। বিজেপি-র রাজ্য নেতারাও নিয়মিত এই জনসংযোগ করে চলেছেন। কিন্তু এই প্রথম হতে চলেছে গণভোজ কর্মসূচি। তা নিয়ে শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে প্রস্তুতি। ব্যবস্থাপনার দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপি-র ওবিসি মোর্চার রাজ্য সভাপতি অজিত দাস বলেছেন, ‘‘শনিবারের মেনুতে থাকছে খিচুড়ি আর একটা পাঁচমিশালি তরকারি। সকলের জন্যই এক পদ। মাঠে এক সঙ্গে হাজার তিনেক কৃষক পরিবারের মানুষ খেতে বসবেন। সকলের জন্য কার্পেটের আসন পাতা হবে। শালপাতার থালা আর মাটির ভাঁড়ের ব্যবস্থা থাকছে। বিজেপি কর্মীরা খাবার পরিবেশন করবেন।’’
তবে শুধু খাওয়াদাওয়াই নয়, তার আগে বক্তৃতাও দেবেন নড্ডা। পাশাপাশি তিনি কৃষকদের সঙ্গে সরাসরি কথাও বলবেন। এর জন্য গণভোজের মাঠে বিশেষ ব্যবস্থা করছে বিজেপি। মাঠের একটি দিকে সারি দিয়ে বেশ কিছু স্টল বানানো হয়েছে। সেখানে নিজেদের মাঠের ফসল নিয়ে হাজির থাকবেন বিশেষ ভাবে আমন্ত্রিত কৃষকরা। রাজ্য বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলছেন, ‘‘কর্মসূচি যেহেতু মালদহে, তাই আমচাষিরা তো থাকবেনই। সেই সঙ্গে ধান, আলু ও অন্যান্য সব্জিচাষিরাও থাকবেন। স্টলে স্টলে ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে চাষবাস নিয়ে কথা বলবেন নড্ডা’জি। শুনবেন তাঁদের সমস্যার কথাও।’’