অনিয়ম: ফুটবল ম্যাচে দূরত্ব-বিধি ভঙ্গ। রবিবার, বারাসতে। নিজস্ব চিত্র
দলের রাজ্য সভাপতি প্রকাশ্য সভায় বলেছেন, ‘করোনা চলে গেছে।’ সম্ভবত সেই বার্তাকেই ধ্রুবসত্য মেনে বারাসতে নকআউট ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করে ফেলল বিজেপি। বলাই বাহুল্য, দূরত্ব-বিধি বা স্বাস্থ্য-বিধির কোনও বালাই দেখা যায়নি খেলার মাঠে। জেলা বিজেপির মতে অবশ্য ইমিউনিটি বাড়ানোর দাওয়াই ছিল এই ফুটবল খেলা!
রবিবার বারাসতের ওই ম্যাচ ঘিরে হইচই শুরু হতেই পদক্ষেপ করে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় আয়োজকদের চার জনকে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে মাইক, লাউড স্পিকার-সহ বেশ কিছু জিনিস। বিজেপির জেলা নেতারা বলছেন, “যুবকদের মধ্যে ইমিউনিটি বাড়াতে এই খেলার আয়োজন হয়েছিল। রাজনৈতিক স্বার্থে পুলিশ আমাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করেছে।”
সংক্রমিতের পরিসংখ্যানে জেলার মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। ওই জেলায় ব্যারাকপুরের পরেই সব থেকে বেশি সংক্রমণ বারাসতে। ওই পুর এলাকায় সংক্রমণ এতই যে, সাত দিন তিনটি বাজার বন্ধ রাখা হয়েছিল। প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য কর্তাদের মতে, উত্তর ২৪ পরগনায় সংক্রমণ বৃদ্ধির মূল কারণ অসচেতনতা।
আরও পড়ুন: দ্বিতীয় সংক্রমণেও ভাবাচ্ছে মৃদু উপসর্গ ও উপসর্গহীনতা
এ দিনের প্রতিযোগিতার আয়োজন সেই মতেই সিলমোহর দিয়ে দিল। বারাসতের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের একটি খেলার মাঠে ১২টি দলকে নিয়ে আয়োজন করা হয় এই ফুটবল প্রতিযোগিতা। সকালে উদ্বোধন করেন বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শঙ্কর চট্টোপাধ্যায়। স্বাভাবিক সময়ের সঙ্গে এ দিনের প্রতিযোগিতার বিশেষ ফারাক ছিল না। বেলা বাড়তেই ভিড় বাড়ে মাঠে। কয়েক জন আয়োজক মাস্ক পরলেও বেশির ভাগ ছিলেন মাস্ক ছাড়া। দর্শকদের না ছিল মাস্ক, না ছিল দূরত্ব-বিধির বালাই। এ নিয়ে হইচই শুরু হতে বারাসত থানার পুলিশ মাঠে হানা দিয়ে খেলা বন্ধ করে দেয়। পুলিশ দেখে দর্শকদের বেশির ভাগই পালিয়ে যান।
আরও পড়ুন: কোভিড দেহ পোড়াতেও রমরমা ব্যবসা!
এমন সময়ে খেলার আয়োজন? শঙ্করবাবুর পাল্টা প্রশ্ন, “বাস-অটো, কোথায় দূরত্ব-বিধি মানা হচ্ছে বলুন তো? বিজেপি করছে বলেই পুলিশ এত সক্রিয়। খেলা বন্ধ যদি করতেই হল, তা হলে সকালে কেন করল না? তৃণমূল যে জনসভার নামে জমায়েত করছে, ক’জনকে পুলিশ ধরেছে?”
এর পরেই শঙ্করবাবুর ব্যাখ্যা, “যুবকদের ইমিউনিটি যাতে বাড়ে, সে জন্যই এই আয়োজন করেছিলাম।” খেললে শারীরিক ক্ষমতা বাড়ে। তবে ইমিউনিটি কী ভাবে বাড়বে? উত্তর দেননি ওই বিজেপি নেতা।