Bird Call

রাজ্যের গণ্ডি ছাড়িয়ে ভোরের কলতান রেকর্ড এ বার দেশ জুড়ে

গত বছর থেকেই প্রথম এ রাজ্যে ‘ডন কোরাস ডে’ উদ্‌যাপন শুরু হয়েছিল। সে বার এপ্রিলের প্রথম রবিবার রাজ্যের প্রায় ২৫টি জায়গা থেকে পাখিদের আসর রেকর্ড করা হয়।

Advertisement

স্বাতী মল্লিক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:৫২
Share:

—প্রতীকী ছবি।

ভোরে পাখিদের কিচিরমিচির রেকর্ড করে তা থেকেই তাদের জগৎকে চেনার চেষ্টা করেন পাখিপ্রেমীরা। আগামী রবিবার সেই ‘ডন কোরাস ডে’ উদ্‌যাপন করতে ভোর হতে না হতেই বাড়ির আশপাশে বা যে কোনও জায়গায় গিয়ে কান পাতবেন তাঁরা। তবে, এ বার আর শুধু এ রাজ্যে নয়, সারা দেশেই পাখিদের কলতান রেকর্ড করে তা শোনানোর ব্যবস্থা করছে রাজ্যের পাখিপ্রেমী সংগঠন ‘বার্ড ওয়াচার্স সোসাইটি’।

Advertisement

গত বছর থেকেই প্রথম এ রাজ্যে ‘ডন কোরাস ডে’ উদ্‌যাপন শুরু হয়েছিল। সে বার এপ্রিলের প্রথম রবিবার রাজ্যের প্রায় ২৫টি জায়গা থেকে পাখিদের আসর রেকর্ড করা হয়। তবে, এ বার রাজ্যের গণ্ডি ছাড়িয়ে সারা দেশের মোট ১৭টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের একাধিক জায়গা থেকে ভোরে পাখিদের ডাক রেকর্ড করবেন ৭৫ জনেরও বেশি পাখিপ্রেমী। এই উদ্যোগের মূলে এ রাজ্যের পাখিপ্রেমী ওই সংগঠন হলেও তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে ‘বার্ড কাউন্ট ইন্ডিয়া’, ‘ই-বার্ড ইন্ডিয়া’, ‘আর্লি বার্ড’-এর মতো জাতীয়
পাখিপ্রেমী সংগঠনগুলি। ‘বার্ড ওয়াচার্স সোসাইটি’র সদস্য, পেশায় চিকিৎসক কণাদ বৈদ্য বলছেন, ‘‘গত বছর যিনি যে জায়গা থেকে ডন কোরাস রেকর্ড করেছিলেন, এ বারও যাতে সেখানে গিয়েই রেকর্ড করতে পারেন, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। তাতে সেই স্থানে পাখিদের জগতে কোনও পরিবর্তন গত এক বছরে হয়েছে কি না, তা হয়তো তাঁর কানে ধরা পড়তে পারে।’’

সাধারণত মে মাসের প্রথম সপ্তাহেই সারা বিশ্বে পালিত হয় ‘ইন্টারন্যাশনাল ডন কোরাস ডে’। ইতিহাস বলছে, আয়ারল্যান্ডের রেডিয়োর উদ্যোগে ২০১৫ সাল থেকে আন্তর্জাতিক স্তরে পাখির কলতান রেকর্ড করে রেডিয়োয় সম্প্রচার শুরু হয়। ৭০টিরও বেশি দেশে সূর্যোদয়ের সময়ে পাখিদের কলতান রেকর্ড করে তা বাজানো হয় রেডিয়োর ওই অনুষ্ঠানে। ২০১৭ সালে সেই উদ্যোগে শামিল হয় ভারতের অল ইন্ডিয়া রেডিয়ো-ও। তবে পাখিপ্রেমীরা জানাচ্ছেন, এ দেশে মে মাসে একে আবহাওয়া খারাপ, তায় প্রবল গরম। তাই এপ্রিল মাসই এখানে পাখিদের ডাক শোনার উপযুক্ত সময়। তাই আন্তর্জাতিক ভাবে ‘ডন কোরাস ডে’র আগেই এ দেশে তা পালন করছেন পাখিপ্রেমীরা।

Advertisement

রাজ্যের আয়োজক সংগঠনের সদস্য ভারতেন্দ্র পারিহার জানাচ্ছেন, আগামী রবিবার ভোর হতে না হতেই যে কোনও জায়গা থেকে অন্তত ১৫ মিনিট ধরে মোবাইলে পাখিদের ডাক রেকর্ড করবেন তাঁরা। এর পরে সকাল ৭টা থেকে একটি জ়ুম বৈঠকে সেই সব রেকর্ডিং, ছবি বা ভিডিয়ো এবং নিজেদের অভিজ্ঞতা জানাতে পারবেন তাঁরা। এ ছাড়া, যাঁরা ওই বৈঠকে ঢুকতে পারবেন না, তাঁদের জন্য থাকছে ইউটিউব চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা। শুধু পাখিপ্রেমী সংস্থার সদস্যেরাই নন, যে কোনও ব্যক্তি মোবাইলে ভোরে পাখির ডাক রেকর্ড করে এই উদ্যোগে শামিল হতে পারেন।

২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক ‘ডন কোরাস ডে’ উদ্‌যাপনে এ দেশ থেকে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন ‘বার্ড ওয়াচার্স সোসাইটি’র সদস্য সুদীপ্ত রায়। গত বছরের মতো এ বারও রাতের অন্ধকারেই চিন্তামণি কর পাখিরালয়ে গিয়ে কান পাতবেন তিনি। বলছেন, ‘‘১০ বছর পরে চিন্তামণিতে পাখির ডাক রেকর্ড করেছিলাম গত বছর। তবে ভোরের কিচিরমিচির শুনে সেখানে পাখির জগতের পরিবর্তন হয়েছে বলে তো মনে হয়নি। শুধু পাখির ছবি তোলাই নয়, পাখি চেনাটাও যে ক্রমশ জনপ্রিয় হচ্ছে, সারা দেশব্যাপী ‘ডন কোরাস ডে’ উদ্‌যাপনই তার প্রমাণ। এই রেকর্ড পরবর্তীকালে জনমাধ্যমে আনা গেলে পাখিদের প্রতি আকর্ষণ আরও বাড়বে বলেই মনে হয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement