ফাইল চিত্র
পেট্রলের দাম ৯৬ টাকা পেরিয়েছে। আর জ্বালানি অগ্নিমূল্য হতেই সঙ্কট বেড়েছে মোটরবাইক-ট্যাক্সির চালকদের। সমস্যা বেড়েছে বিভিন্ন খাবার সরবরাহকারী অ্যাপ এবং ই-কমার্স সংস্থার ডেলিভারি কর্মীদেরও। অল্প দূরত্বে ঘিঞ্জি রাস্তা দিয়ে দিনভর যাওয়া-আসা করতে হয় বলে বাইকের জ্বালানি এবং রক্ষণাবেক্ষণের খরচ তাঁদের ক্ষেত্রে অনেকটাই বেশি। সেই সমস্ত খরচ সামলে সারা দিনে তিন-চারশো টাকা আয় করতেও নাকাল হতে হচ্ছে তাঁদের।
বাইক-ট্যাক্সির চালকদের সমস্যা আরও বেশি। রাস্তায় ডেলিভারি সংস্থার বাইকচালকদের পুলিশ রেয়াত করলেও বাইক-ট্যাক্সির চালকদের প্রায়ই মোটা অঙ্কের জরিমানার মুখে পড়তে হচ্ছে। ফলে, খানিকটা পুলিশের চোখ এড়িয়েই কাজ করতে হয় তাঁদের। বারুইপুরের বাসিন্দা সঞ্জয় সর্দার একটি অ্যাপ-নিয়ন্ত্রিত বাইক-ট্যাক্সির চালক। তাঁর কথায়, ‘‘সরকারি বিধিনিষেধের কারণে রাস্তায় এখন যাত্রী কম। তার মধ্যে এক জন যাত্রীকে নামিয়ে পরের যাত্রীকে তুলতে প্রায়ই ছ’-সাত কিলোমিটার খালি বাইক নিয়ে ছুটতে হয়। এই কারণে প্রতিদিন ৩৫-৪০ কিলোমিটার খালি বাইক নিয়ে ছুটতে হচ্ছে। এই চাপটা বড্ড বেশি হয়ে যাচ্ছে।’’ খিদিরপুরের বাসিন্দা মাসুম আহমেদের অভিযোগ, ‘‘ডেলিভারি সংস্থার কর্মীদের জন্য বাণিজ্যিক লাইসেন্স বাধ্যতামূলক নয়। কিন্তু বাইক-ট্যাক্সির ক্ষেত্রে তা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বিপুল খরচের কারণে ওই লাইসেন্স প্রায় কারও নেই। ফলে রাস্তাঘাটে পুলিশের চোখ এড়িয়ে যাত্রী নিয়ে যেতে হয়।’’
কসবার বাসিন্দা তন্ময় মণ্ডল একটি বাইক-ট্যাক্সি সংস্থার চালক। তাঁর কথায়, ‘‘একেই যাত্রী কম। তার উপরে মূল ভাড়ার প্রায় ২০ শতাংশ টাকা অ্যাপ সংস্থাকে দিতে হয়।’’ বেশির ভাগ চালকেরই বক্তব্য, অতিমারির এই পরিস্থিতিতে দিনে ৩০০-৪০০ টাকা রোজগার করতেই তাঁদের মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হচ্ছে। এআইইউটিইউসি অনুমোদিত ‘কলকাতা সাবার্বান বাইক-ট্যাক্সি অপারেটর্স ইউনিয়ন’-এর নেতা শান্তি ঘোষ বলেন, ‘‘পেট্রলের মূল্যবৃদ্ধির গুরুতর প্রভাব পড়েছে বাইক-ট্যাক্সি চালকদের উপরে। কোনও ক্যাব সংস্থাই ভাড়া বাড়ায়নি। অনেকেই সদ্য বাইক কিনে অন্য পেশা থেকে এসেছেন।’’ তবে, রাজ্য সরকার বেসরকারি ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজের অনুমতি দেওয়ায় ফের কিছুটা যাত্রী পাওয়ার আশা দেখছেন বাইক-ট্যাক্সির চালকেরা।